মে ১১, ২০২২, ০৯:০১ পিএম
ন্যাটোর সদস্য হতে খুব শিগগিরিই আবেদন করতে যাচ্ছে ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন। সামরিক জোটটি থেকে দীর্ঘদিন নিজেদের গুটিয়ে রাখার পর অবশেষে দেশ দুটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবারই ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট শুলি নিওনিস। আর সুইডেন ন্যাটোতে যোগ দেবে কিনা সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ১৯৯৪ সাল থেকে ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন ন্যাটোর সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে। শীতল যুদ্ধের পর তারা ন্যাটোর বেশ কয়েকটি মিশনে অংশ নিয়েছে।
বুধবার সু্ইডেন ও ফিনল্যান্ড সফরে গেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সফরে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী মাগডালিনা অ্যান্ডারসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। ইউক্রেনে হামলার পর থেকেই উত্তর ইউরোপের এ দেশ দুটি নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শংকার মধ্যে রয়েছে।
যদি সুইডেন ন্যাটোতে যোগ দেয়, তবে দেশটির প্রায় ২০০ বছরের নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরে আসতে হবে। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে পরাজিত হয়ে ফিনল্যান্ড নিরপেক্ষ অবস্থান নীতি গ্রহণ করে। সাধারণত কোন দেশের নিরপেক্ষ অবস্থান বলতে বোঝায়; কোন দেশ কোন দেশকে আক্রমণ করলে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকা দেশটি কোন ধরণের সহায়তা করবে না, এমনকি অন্য কোন দেশে হামলা চালাতে নিজ ভূখন্ড ব্যবহারও করতে দেবে না।
এতোদিন ফিনল্যান্ডে নাগরিকরাও চাইতো না; তাদের দেশ ন্যাটোর সদস্য হয়ে যুদ্ধে জড়াক। তবে ইউক্রেনে রুশ হামলার পর পরিস্থিতি বদলে গেছে। যুদ্ধের আগে যেখানে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ন্যাটোর সদস্যভুক্তি চাইতো, এখন সেই হার ৭৬ শতাংশে পৌছেছে। সুইডেনের ৫৭ শতাংশ নাগরিক চায় ন্যাটোতে যোগ দিতে। তারা মনে করে, রাশিয়াসহ অন্য যেকোন দেশের হামলা থেকে সুরক্ষায় ন্যাটোর সদস্যভুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কারণ ন্যাটোর ‘৫ অনুচ্ছেদে’ বলা আছে, ন্যাটোর কোন সদস্যের ওপর হামলার অর্থ ন্যাটোর সব সদস্যের ওপর হামলা।
এর আগে ১৯৩৯ সালে ফিনল্যান্ডে আগ্রাসন চালায় সোভিয়েতরা। সেবার ফিনল্যান্ড প্রায় ৩ মাস সোভিয়েত সৈন্যদের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলেও নিজ ভূখন্ডের ১০ শতাংশের দখল হারায়। রাশিয়ার সঙ্গে বর্তমানে ১ হাজার ৩শ ৪০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে ফিনল্যান্ডের।
বরাবরই দেশ দুটির ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টি নিয়ে আপত্তি দিয়ে আসছে রাশিয়া। মূলত ইউক্রেনসহ কয়েকটি দেশ ন্যাটোতে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করার পর থেকেই ওই অঞ্চলে অস্থিরতা তৈরি হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি এই ইস্যুতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে মস্কো। হামলার পর ন্যাটোর সদস্য হওয়ার ইচ্ছা প্রত্যাহার করে কিয়েভ। তবে হামলা অব্যাহত রাখে রাশিয়া।