জুন ২০, ২০২৩, ০৪:৫৭ এএম
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন বেইজিং সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। চীনা কর্মকর্তাদের সাথে দুই দিনের উচ্চ-পর্যায়ের আলোচনার পর সোমবার বেইজিংয়ে শি জিনপিংয়ের সাথে সাক্ষাত করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাথে ওই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয় বলে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, এই সফর ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে বড় ধরনের অগ্রগতি না আনলেও অধিক স্থিতিশীলতা তৈরি করবে বলে আশা করছেন তারা।
চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনালের অনলাইন সংস্করণ জানায়, বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, “বিশ্ব উন্নত হচ্ছে, যুগ বদলাচ্ছে। এমন একসময়ে বিশ্বের জন্য একটি স্থিতিশীল চীন-মার্কিন সম্পর্ক প্রয়োজন। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঠিকভাবে পথচলা মানবজাতির ভাগ্য ও ভবিষ্যতের ওপর প্রভাব ফেলবে।”
বিশাল এই পৃথিবী চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সমান্তরাল উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিকে সম্পূর্ণরূপে ধারণ করতে সক্ষম উল্লেখ করে শি জিনপিং বলেন, “ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মতো চীনারাও আত্মমর্যাদাশীল, আত্মবিশ্বাসী ও আত্মনির্ভরশীল জাতি। তাদেরও উন্নত জীবন সন্ধানের অধিকার রয়েছে। এমতাবস্থায় দুই দেশের মধ্যে অভিন্ন কল্যাণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।” পাশাপাশি একে অপরের সাফল্যকে হুমকি নয়, বরং সুযোগ হিসেবে গণ্য করতে হবে বলেও জানান চীনিা প্রেসিডেন্ট।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে অঅন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন- মন্তব্য করে শি জিনপিং বলেন, “বিশ্ব এই দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত দেখতে চায় না। তারা এই দুই দেশের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা দেখার ব্যাপারে আগ্রহী।”
এসময় চীঢনা প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, “চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ইতিহাস, জনগণ ও বিশ্বের প্রতি দায়বদ্ধতার মনোভাব নিয়ে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে সঠিক পথে পরিচালিত করা এবং যৌথভাবে বৈশ্বিক শান্তি ও উন্নয়নে অবদান রাখা।”
বড় দুই রাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিযোগিতা যুগের প্রবণতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় উল্লেখ করে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, “চীন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে সম্মান করে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ জানাতে বা প্রতিস্থাপন করতে চায় না। একইভাবে, চীনকে সম্মান করা এবং চীনের বৈধ অধিকার ও স্বার্থের ক্ষতি না-করাও যুক্তরাষ্ট্রের উচিত।”
এসময় জো বাইডেনের শুভেচ্ছা জানিয়ে চীনা প্রেসিডেন্টকে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বিশ্বাস করেন যে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য দু’দেশেরই দায়িত্ব পালন করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দেওয়া প্রতিশ্রুতি মেনে চলবে।”
ওয়াশিংটন ‘নতুন শীতলযুদ্ধ’ চাইবে না’ উল্লেখ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র চীনের শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করবে না, মিত্রদের শক্তিশালী করে চীনের বিরোধিতা করবে না, ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা’ সমর্থন করবে না, এবং চীনের সঙ্গে সংঘাতের কোনো ইচ্ছাও পোষণ করবে না।”
এসময় অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে উচ্চ স্তরের আদান-প্রদান চালাতে, মসৃণ যোগাযোগ বজায় রাখতে, দায়িত্বশীলভাবে মতভেদ নিয়ন্ত্রণ করতে, এবং পারস্পরিক সংলাপ, বিনিময় ও সহযোগিতা উন্নত করতে ইচ্ছুক।”
প্রসঙ্গত, এর আগে চীনের অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে ব্লিঙ্কেনের ১০ ঘণ্টারও বেশি সময়ের আলোচনার পর প্রেসিডেন্ট শি জিনিপিংয়ের সাথে তার ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।