ফেসবুকের বিরুদ্ধে ১৫ হাজার কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ দাবি রোহিঙ্গাদের

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ৭, ২০২১, ১১:৫৬ এএম

ফেসবুকের বিরুদ্ধে ১৫ হাজার কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ দাবি রোহিঙ্গাদের

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক বা মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানোর অভিযোগে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা কয়েক ডজন রোহিঙ্গা শরণার্থীর দায়ের করা মামলায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৫০ বিলিয়ন ডলার বা ১৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলার দাবি করা হয়েছে। খবর বিবিসি’র।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা বিবিসি’র খবরে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ‘বছরের পর বছর ধরে ঘৃণা, বিদ্বেষমূলক ও বিপজ্জনক ভুল তথ্য প্রচার করা’র অভিযোগ আনা হয়েছে ফেসবুক বা মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোর বিরুদ্ধে। তবে  এ ব্যাপারে ফেসবুক বা মেটার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের কয়েকজন শরণার্থীর পক্ষে ব্রিটিশ একটি ল’ ফার্ম ফেসবুককে একটি চিঠি দিয়েছে। ওই চিঠিতে রোহিঙ্গারা যেসব অভিযোগ তুলেছে সেগুলো হলো-

১.রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়াতে ফেসবুক অ্যালগরিদমের ব্যবহার;

২. মডারেটর ও ফ্যাক্ট চেকারদের মধ্যে ‘বিনিয়োগ করতে ব্যর্থ’ হওয়া, যারা মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল

৩. তারা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেয় এমন পোস্ট সরিয়ে ফেলতে বা ডিলিট করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা ও গণমাধ্যমের সতর্কতা সত্ত্বেও এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়া।

অপরদিকে, রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে মার্কিন  যুক্তরাষ্ট্রে একটি আইনি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সান ফ্রান্সিসকোতে দায়ের করা ওই অভিযোগে ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভালো মার্কেট তৈরি করতে রোহিঙ্গাদের জীবনের সওদা করার’ জন্য বলা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেওয়া ওইসব রোহিঙ্গারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে প্রকাশিত ফেসবুক পোস্টগুলো উদ্ধৃত করেছে।

ওইসব পোস্টের মধ্যে ২০১৩ সালে প্রকাশিত একটি পোস্ট ছিল- ‘হিটলার ইহুদিদের বিরুদ্ধে যেভাবে যুদ্ধ করেছিল, আমাদের অবশ্যই তাদের সঙ্গে সেভাবে যুদ্ধ করতে হবে।’

আরেক পোস্টে বলা হয়েছে, ‘তাদের দ্রত সময়ে আল্লাহর কাছে পৌঁছে দিতে তেল ঢেলে আগুন জালিয়ে দাও।’

প্রসঙ্গত, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালে স্বীকার করে, তারা রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। ওইসময় জাতিসংঘ অনলাইনে ঘৃণা ছড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় ‘ধীরগতি ও অকার্যকর’ বলে ফেসবুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে।

মিয়ানমারে ফেসবুকের দুই কোটিরও বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে। এর মধ্যে অনেকের সংবাদ পাওয়া ও শেয়ার করার অন্যতম প্রধান মাধ্যম ফেসবুক।

২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ক্রাকডাউনে ১০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়। এসময় মিয়ানমার বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ খুন, ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ নানা ধরনের অভিযোগ ওঠে।মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার ও নির্যাতনে দেশটি থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরাণার্থী।

Link copied!