যে কারণে ভারতের কাছে শান্তি প্রতিষ্ঠায় হস্তক্ষেপ চাইছেন জেলেনস্কি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ২৭, ২০২২, ০৫:২৬ পিএম

যে কারণে ভারতের কাছে শান্তি প্রতিষ্ঠায় হস্তক্ষেপ চাইছেন জেলেনস্কি

শান্তি প্রতিষ্ঠায় মোদীর হস্তক্ষেপ চাইলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সোমবার টুইটবার্তায় নরেন্দ্র মোদীর সাথে আলোচনার কথা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। জেলেনস্কি বলেছেন, ভারত এখন জি-২০-র প্রেসিডেন্ট। সেই উপলক্ষেই তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন। ফোনে দুইপক্ষের বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা হয়েছে বলে জেলেনস্কি জানিয়েছেন। সেখানে মোদীর কাছে জেলেনস্কি আবেদন করেছেন একটিশান্তি ফর্মুলা তৈরি করার জন্য। বস্তুত, রাশিয়ার সাথে ভারতের সম্পর্কের কথা মাথায় রেখেই এই আবেদন করেছেন বলে দাবি জেলেনস্কির।

ভারতের নেতা মোদী শান্তি প্রতিষ্ঠার ওই আবেদনে সাড়াও দিয়েছেন বলে ইউক্রেনের দাবি। ভারত অবশ্য এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, মোদী তাঁকে বলেছেন, দ্রুত এই যুদ্ধ শেষ হওয়া প্রয়োজন। বেসামরিক মানুষের দুর্গতি বন্ধ হওয়া দরকার। শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভারত ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছেন মোদী।

ভারতের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক বরাবরই ভালো। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পশ্চিমা দেশগুলি রাশিয়ার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও ভারত রাশিয়ার সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক কোনো অবস্থাতেই নষ্ট করেনি। জাতিসংঘে ইউক্রেনযুদ্ধ সম্পর্কিত প্রায় সব ভোটে ভারত নিজেকে সরিয়ে রেখেছে।

জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ভারত এখন জি-২০-র প্রেসিডেন্ট। তাদের দায়িত্ব অনেক। শান্তি প্রতিষ্ঠার ফর্মুলাও সেই দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

এদিকে ইউক্রেন অনেকদিন ধরে পশ্চিমাদের কাছে দূরে হামলা করার অস্ত্র চাইছে। যুক্তরাষ্ট্র দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম ‘হাইমার্স’ ব্যবস্থা দিলেও রাশিয়ার ভয়ে সেটির সীমা কমিয়ে দিয়েছে। ফলে শুধু রাশিয়া অধিৃকত এলাকায় সেটি ব্যবহার করা যাবে। ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেসন্সের উলরিকে ফ্রাঙ্কে মনে করছেন, রাশিয়ায় হামলা চালিয়ে ইউক্রেন পশ্চিমা বিশ্বকে এই সংকেত দিয়েছে যে, তাদের ছাড়াও তাঁরা হামলা করতে সক্ষম।

সোমবারই ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা বলেছেন, তাঁরা চান ফেব্রুয়ারির শেষে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করুক। তাঁর বক্তব্য, জাতিসংঘই সবচেয়ে নিরপেক্ষ মঞ্চ। যুদ্ধের এক বছরের মাথায় জাতিসংঘ মধ্যস্থতা করে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাক। বস্তুত, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া প্রথম ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছিল। যুদ্ধের এক বছরের মাথায় জাতিসংঘে শান্তিপ্রক্রিয়ার বৈঠক চাইছে ইউক্রেন।

কুলেবা জানিয়েছেন, যে কোনো যুদ্ধই শেষপর্যন্ত কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে শেষ হয়। জাতিসংঘই সেই আলোচনার সবচেয়ে ভালো জায়গা। সাংবাদিকেরা কুলেবাকে প্রশ্ন করেছিলেন, রাশিয়াও সেই বৈঠকে যোগ দেবে তো? কুলেবার মন্তব্য, তার আগে আন্তর্জাতিক আদালতে রাশিয়াকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। যুদ্ধে তাঁরা যে অপরাধ করেছে, তাঁর জবাব দিতে হবে।

ইউক্রেন চায়, জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস স্বয়ং এই সভা পরিচালনা করুন। গুতেরেস যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য এর আগেও হস্তক্ষেপ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন কুলেবা। তাই তাকে সামনে রেখেই ফেব্রুয়ারিতে শান্তি আলোচনা শুরু করতে চায় ইউক্রেন।

সূত্র: রয়টার্স, এপি ও এএফপি।

Link copied!