ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের সতর্ক করে দিল তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক। রাশিয়ার ওপর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জ্বালানি নিষেধাজ্ঞার পরিণাম ভয়াবহ হবে। এরমধ্যেই ইউরোপের দেশগুলো ভুগতে শুরু করেছে।
সোমবার ওপেকের মহাসচিব মোহাম্মদ বারকিন্দো এসব কথা বলেন। বারকিন্দো বলেন, রাশিয়ার ওপর এসব নিষেধাজ্ঞার কারণে তেল সরবরাহ ব্যবস্থায় ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে। এতে ইউরোপে যে তেল সংকট তৈরি হবে, তা পূরণের জন্য বিকল্প কোনো উৎস নেই বলেও সতর্ক করেন তিনি।
ইউক্রেনে হামলার প্রতিক্রিয়ায় সম্প্রতি রাশিয়া থেকে বিভিন্ন জ্বালানি পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। ইউরোপীয় ইউনিয়নও যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের পথ অনুসরণ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে। রাশিয়ার জ্বালানির ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নির্ভরতা কম, তবে ইউরোপের ক্ষেত্রে তা নয়।
ইউরোপে জ্বালানি আমদানির একটা বড় অংশ রাশিয়া থেকে আসে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করার এ প্রচেষ্টা ভয়াবহ ফল বয়ে আনতে পারে। বিশেষ করে, জার্মানির গোটা শিল্পব্যবস্থায় ধস নামার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অস্ট্রিয়াভিত্তিক বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানি ওএমভির প্রধান ইতিমধ্যে বলেই দিয়েছেন যে রাশিয়ার কাছ থেকে গ্যাস কেনা বন্ধ করাটা তাঁর দেশের জন্য অসম্ভব।
গতকাল ওপেকের মহাসচিবও বলেন, জ্বালানি নিষেধাজ্ঞার ফল ইউরোপের জন্য ভয়াবহ হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কর্মকর্তাদের সতর্ক করে তিনি বলেন, মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা আরোপের কারণে বিশ্ববাজারে প্রতিদিন রাশিয়ার ৭০ লাখ ব্যারেল পরিমাণ তেল সরবরাহ কমে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকার করেছে, ব্যয়বহুল তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) রপ্তানির পরিমাণ বাড়িয়ে ঘাটতি পূরণ করবে তারা। অথচ ইউরোপের এলএনজি টার্মিনালগুলো ইতিমধ্যে পূর্ণ সক্ষমতা নিয়ে কাজ করছে, অর্থাৎ জ্বালানি সংরক্ষণের জন্য কোনো জায়গা নেই।
গত সপ্তাহে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট রাশিয়ার তেল, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ও পারমাণবিক জ্বালানির ওপর পুরোপুরিভাবে এবং অবিলম্বে অবরোধ আরোপের দাবি করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ দাবি পূরণ হলে ইউরোপীয়দের জীবন মানের ওপর এর উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার মতো কিছু দেশ স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, নিজেদের স্বার্থে নিষেধাজ্ঞার এ পরিকল্পনা উপেক্ষা করবে তারা।
সূত্র: আরটি