শিনজো অ্যাবের মতো হত্যার শিকার যে বিশ্ব নেতারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জুলাই ৯, ২০২২, ০৫:১৩ এএম

শিনজো অ্যাবের মতো হত্যার শিকার যে বিশ্ব নেতারা

শুক্রবার (৭ জুলাই) এক বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। বিশ্বে রাজনৈতিক দলের নেতাদের এভাবে হত্যা করার ঘটনা আগেও ঘটেছে। ১৯৬৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডিকে হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এ ধরনের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আলোচনায় আসে।

জন এফ কেনেডি, ১৯৬৩

১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি টেক্সাসের ডালাসের একটি রাস্তায় খোলা লিমুজিন গাড়িতে করে যাওয়ার সময় আততায়ীর বুলেটে নিহত হন। সেই সময়ে তার সে মৃত্যু গোটা বিশ্বকে হতভম্ব করে দিয়েছিলো। এ ঘটনার পর কেনেডির হত্যাকারী মার্কিন নৌ বাহিনীর বিপথগামী সদস্য লি হার্ভে অসওয়ার্লডকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতার এবং অভিযুক্ত করা হয়। যদিও এ হত্যাকাণ্ড নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্বের জন্ম দিয়েছে। প্রেসিডেন্টকে হত্যা করায় কারাগারে পাঠানোর সময়ই লাইভ টেলিভিশনের সামনেই ২৬ বছর বয়সী অসল্যান্ডকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

আনোয়ার আল সাদাত, ১৯৮১

মিশরের রাজধানী কায়রোতে একটি সামরিক প্যারেডে ১৯৮১ সালের ৬ অক্টোবর দেশটির প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতকে জঙ্গিরা নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের ৩ বছর আগে বহুল আলোচিত ‘১৯৭৮ ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি’ স্বাক্ষর করেন আনোয়ার সাদাত। যে চুক্তির ফলে ইসরাইলের সঙ্গে শান্তি স্থাপিত হয়। ইসরাইলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর এটাই ছিলো প্রথম শান্তি চুক্তি।

ইন্দিরা গান্ধী, ১৯৮৪

১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে গুলি করে হত্যা করে তারই দুই দেহরক্ষী। শিখ ওই দুই দেহরক্ষী হত্যাকাণ্ডের পর জানায়, বিচ্ছিন্নতাবাদিদের দমাতে অম্রিতসরের স্বর্ণ মন্দিরে সামরিক বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে তারা প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের পর ইন্ধিরা গান্ধীর ছেলে রাজীব গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন এবং ১৯৮৯ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকেন। ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে নির্বাচনী প্রচারের সময় রাজীব গান্ধীও এক তামিল আত্মঘাতি হামলাকারীর বোমায় নিহত হন। ১৯৯১ সালের ২১ মে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

বেনজির ভুট্টো, ২০০৭

২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডিতে জনসভায় পাকিস্তানের বিরোধীদলীয় নেতা বেনজির ভুট্টো আততায়ীর গুলি ও বোমায় নিহত হন। ঘটনার বর্ণনায় জানা গেছে, একজন আততায়ী সভাচলাকালে বেনজিরের ওপর বোমা হামলা করে। সে হামলায় বেনজির ভুট্টোসহ ২৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনার মাত্র দুই মাস আগে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো দুবাই এবং লন্ডনে প্রায় ৮ বছরের রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকার পর পাকিস্তানের মাটিতে ফেরেন।

ওলফ পালমা, ১৯৮৬

১৯৮৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী ওলফ পালমা এক বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হন। রাজধানী স্টকহোমের একটি সিনেমা  হলে ‘দ্য মোজার্ড ব্রাদার্স’ নামের একটি সিনেমা দেখে স্ত্রীকে নিয়ে বাসায় ফেরার পথে তাকে গুলি করা হয়। হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনার এখনো কোন সুরাহা হয়নি।

এছাড়া আততায়ীর গুলিতে ১৯৯২ সালের ২৯ জুন আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বোদিয়াফ নিহত হন। নির্বাচনের মাত্র ৬ মাস পরেই দেশটির আনাবায় একটি জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় তার ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। গুলি করেন তার দেহরক্ষী লেমবারেক বোমারাফি।

১৯৯৫ সালের ৪ নভেম্বর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী আইজাক রবিনকে ইগাল আমির নামে একজন ইহুদি চরমপন্থী গুলি করে হত্যা করে। তেল আবিবে একটি শান্তির‌্যালীর কর্মসূচির শেষে তাকে গুলি করা হয়। ওই র‌্যালীতে বক্তৃতায় শেষ করার ওই বন্দুকধারী খুব কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে পরপর তিনবার গুলি করে।

২০২১ সালের ৭ জুলাই হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনাল মইজকে দেশটির ২৮ সদস্যের একটি কমান্ডোদল গুলি করে হত্যা করে। সেই সময় তিনি পোর্ট অব প্রিন্সে তার ব্যক্তিগত বাসভবনে ছিলেন। ওই ঘটনায় কমান্ডদের মধ্যে ৩ জন নিহত হন এবং ১৮ জন কলাম্বিয়ান সৈন্যসহ ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

Link copied!