প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তের পদত্যাগ, আগাম নির্বাচন এবং সংবিধান পরিবর্তনের দাবিতে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে গত মাস থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। এই বিক্ষোভে কয়েক ডজন লোকের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে রাজধানী লিমায় বিক্ষোভ শুরু করেছে কয়েক হাজার মানুষ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে বৃহস্পতিবারের এ বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেকেই দেশটির আদিবাসী অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দা।
এদিন লিমার অনেক রাস্তাতেই নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া বিক্ষোভকারীদের মোকাবেলায় অস্ত্রধারী দাঙ্গা পুলিশ দেখা গেছে।
সান মার্টিন প্লাজার এক ঐতিহাসিক ভবনে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। কীভাবে আগুন লেগেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি স্থানীয় রেডিওকে বলেছেন দমকল বাহিনীর এক কমান্ডার।
কানাডাভিত্তিক খনি কোম্পানি হাডবে এক বিবৃতিতে জানায়, বিক্ষোভকারীরা পেরুতে তাদের ইউনিটের একটি স্থাপনায় ঢুকে সেটির ক্ষতিসাধন করেছে, গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি ও যানবাহন পুড়িয়ে দিয়েছে।
এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আলবের্তো ওতারোলা বলেন, “এটা বিক্ষোভ হতে পারে না, যা চলছে তা আইনের শাসন নস্যাতে উদ্দেশ্যমূলক নাশকতা।”
সামজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকেই বলছেন, এক পুলিশ কর্মকর্তার ছোড়া কাঁদুনে গ্যাসের গ্রেনেড থেকে লিমার ওই ভবনে আগুন ধরেছে। তবে এই ভাষ্য খারিজ করে দিয়েছেন পেরুর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
অস্থিরতা এরই মধ্যে রাজধানীর বাইরে দূরের শহরগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে। পতাকা ও ব্যানার নিয়ে হাজার হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে- বাসে চড়ে লিমায় এসে বিক্ষোভ দেখায়। তারা দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আয়াকুচো ও হুলিয়াকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জন্য সরকার ও পুলিশের ওপর ক্ষোভ উগরে দেয়।
দক্ষিণাঞ্চলীয় আরেকিপায় বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেষ্টা করা কয়েকশ বিক্ষোভকারীর ওপর পুলিশকে কাঁদুনে গ্যাস ছুড়তে দেখা গেছে স্থানীয় টেলিভিশনের ফুটেজে। পরে আরেকিপা ও কুস্কো বিমানবন্দরের সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এই দুই বিমানবন্দরের পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর হুলিয়াকায় আরেকটি বিমানবন্দরে ‘সমন্বিতভাবে হামলা হয়েছে’ বলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দাবি করেন প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তে। ভাংচুরকারীদের শাস্তি দেওয়ারও অঙ্গীকার করেন তিনি।