সেনাবাহিনী যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করে পাকিস্তানের রাজনীতি, অর্থনীতি আর সমাজব্যবস্থা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ১৬, ২০২২, ১২:২৩ পিএম

সেনাবাহিনী যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করে পাকিস্তানের রাজনীতি, অর্থনীতি আর সমাজব্যবস্থা

চলতি মাসে কয়েকদিনের চূড়ান্ত নাটকীয়তার পর নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নাওয়াজের সভাপতি শাহবাজ শরীফ। এর আগে ১০ই এপ্রিল পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন ইমরান খান। 

ইমরান খানপররাষ্ট্র নীতিতে ইমরান খানের সাথে সেনাবাহিনীর মতবিরোধ ছিল। ছবি: EPA

ইমরান খানের পতনের পর পাকিস্তানের রাজনীতিতে নতুন করে সেনাবাহিনীর ভূমিকার কথা আলোচনায় এসেছে এবং তার বিদায়ের পেছনের শক্তি হিসাবে আঙুল উঠেছে দেশটির সেনাবাহিনীর দিকে।

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সাথে মত পার্থক্যের কারণেই সরে যেতে হয়েছে ইমরান খানকে।

যদিও এত নাটকীয়তা আর উত্তেজনার মধ্যে রাজনীতির মূলমঞ্চে দেখা যায়নি সেনাবাহিনীকে।

কিন্তু দেশটির রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর যে এত প্রাধান্য, সেটি তারা কিভাবে অর্জন করেছে আর কিভাবেই বা তা বজায় রাখছে?

কেবল এবারের ঘটনাপ্রবাহে নয়, পাকিস্তানের রাজনীতিতে যেকোন পালাবদলের সাথে সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততাকে অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠতে দেখা গেছে।

নিরাপত্তা ইস্যু

নতুন একটি রাষ্ট্র হিসেবে ১৯৪৭ সালে যখন পাকিস্তান রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ ঘটে, সেটি হয়েছিল রাজনৈতিক নেতৃত্বের হাত ধরেই। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই দেশটির রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর প্রবেশ ঘটে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, একেবারে শুরু থেকেই পাকিস্তানের রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর সম্পৃক্ততা ছিল।

কিংস কলেজ লন্ডনের সমর-বিদ্যা বিভাগের সিনিয়র ফেলো এবং পাকিস্তান বিশ্লেষক আয়েশা সিদ্দিকা বলছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে জন্মলাভ করায়, পাকিস্তানে শুরু থেকেই নিরাপত্তার ইস্যুটি ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

সে কারণে শুরু থেকেই সেনাবাহিনী গুরুত্ব পেয়ে এসেছে, যা ক্রমে রাজনীতিতে তাদের প্রভাব বিস্তারের পর্যায়ে নিয়ে গেছে বলে মনে করেন আয়েশা সিদ্দিকা।

"বিশ্বযুদ্ধের পর সেনাবাহিনী খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল, কারণ তখন জাতীয় নিরাপত্তা হয়ে উঠেছিল সবচেয়ে জরুরি বিষয়। এর পর থেকে সেনাবাহিনী একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে," তিনি বলেন।

তিনি বলছেন, শুরু থেকেই বেসামরিক নেতৃবৃন্দকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে দেয়নি সেনাবাহিনী।

"তারা নিজেরা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিত। প্রতিরক্ষা বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত সেনাবাহিনী দ্বারাই প্রভাবিত ছিল। সেসব নিয়ে বেসামরিক নেতৃবৃন্দকে কোন বিতর্ক কিংবা হস্তক্ষেপ করা, কিংবা প্রতিরক্ষা বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ মিলিটারি কখনো দিত না। এভাবে তারা একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়, ক্রমে যেটি অত্যন্ত ক্ষমতাবান প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে," বলেন ড. সিদ্দিকা।

 

 

পাকিস্তান সেনাপ্রধান জে. কামার রশীদ বাজওয়া

সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া: ছবি: গেটি ইমেজ

রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতা

পাকিস্তান রাষ্ট্রে সেনাবাহিনীর অবস্থান এখন এমনই শক্তিশালী যে, যে কোন রাজনৈতিক দলই তাদের সাথে আপোষ না করে টিকে থাকতে পারে না। বলা হয়ে থাকে, এ পর্যন্ত দেশটির কোন প্রধানমন্ত্রী তার পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি।

কিন্তু সেনাবাহিনী ক্ষমতা-কাঠামোর খুব কাছাকাছি থাকলেও, দেশটিতে প্রথম সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছিল ১৯৫৮ সালে জেনারেল আইয়ুব খানের নেতৃত্বে।

তার আগেই দেশটির শাসনব্যবস্থায় সামরিক-বেসামরিক যৌথ অংশীদারিত্ব চালু হয়ে গিয়েছিল আর রাজনীতিবিদদের ব্যর্থতা এবং অদক্ষতার কারণে সেটি হয়েছিল বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আমেনা মহসিন বলছেন, পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্ব রাজনীতি থেকে সেনাবাহিনীকে পৃথক না করে বরং বারবার তাদের ওপর নির্ভর করেছে, যার ফল হিসেবে দেশটিতে সামরিক বাহিনী এত প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে।

"যেহেতু পাকিস্তানে একটা রাজনৈতিক ভ্যাকুয়াম ছিল, ফলে পাকিস্তানে সিভিল-মিলিটারি অ্যালায়েন্স যাকে বলে তেমন একটা ব্যবস্থা ছিল, যেখানে আমলাদের প্রচণ্ড দাপট ছিল। যদি দেশে রাজনৈতিক ইন্সটিটিউশনস না থাকে, তাহলে আপনি সেইসব ইন্সটিটিউশনের ওপর অতি নির্ভরশীল হয়ে যাবেন যারা অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে টিকিয়ে রাখবে," বলছেন অধ্যাপক আমেনা মহসিন।

তিনি বলেন এক্ষেত্রে আমলা, সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দা বাহিনী ক্ষমতাবান থাকে।

"এসব ক্ষেত্রে গোয়েন্দা বাহিনী খুবই শক্তিশালী হয়ে যায়, যেটা পাকিস্তানের আইএসআইয়ের ব্যাপারে আমরা দেখি। এক সময় দেখা যায় যে রাজনীতিবিদরা যেহেতু ওদের কাছ থেকে অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা নিয়ে থাকে, ওরাও তাদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, ওদের ক্ষমতাটা অনেক বেশি হয়ে যায়।

Imran Khan tried to sack Gen Bajwa, claims dissident

আপনি যদি গণতন্ত্রের অন্য ইন্সটিটিউশনকে বিল্ডআপ না করেন, তখন এগুলো তো শক্তিশালী হবেই, আর এক্ষেত্রে হয়েছেও তাই," বলেন অধ্যাপক মহসিন।

অর্থনীতিতে বড় শক্তি

প্রথম সেনা অভ্যুত্থান হবার পর সেনাবাহিনী আর ব্যারাকে ফিরে যায়নি। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব রাজনৈতিক নেতৃত্বের হাতে ফিরলেও, সেনাবাহিনী সবসময়ই ছিল ক্ষমতার আশেপাশে।

দেশটির ৭৫ বছরের মধ্যে ইতিহাসে সামরিক বাহিনী পাকিস্তান শাসন করেছে ৩৩ বছর। যখন তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল না, তখনও তাদের প্রাধান্য ছিল সবকিছুতে।

সেজন্য নিরাপত্তার প্রশ্নটিকে ব্যবহার করেছে তারা বরাবর। যেহেতু রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের অল্প সময়ের মধ্যেই ভারতের সাথে সীমান্তে একটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল পাকিস্তান, তার ফলে নিরাপত্তার ইস্যুটি প্রতিষ্ঠিত করা সহজ হয়েছিল তাদের জন্য।

কিন্তু পাকিস্তান বিশ্লেষক আয়েশা সিদ্দিকা বলছেন, এর পেছনে অর্থনৈতিক কারণটিও খুবই জরুরি। পাকিস্তানের জাতীয় ব্যয়ের প্রায় এক তৃতীয়াংশ খরচ হয় সেনাবাহিনীর পেছনে, আর সেই সাথে দেশটির কৃষি ও শিল্প উৎপাদনসহ নানা ধরণের ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে সেনাবাহিনী।

তিনি বলেন, "পাকিস্তানের অর্থনীতিতে তারা সবচেয়ে বড় প্লেয়ারদের একটি। কৃষি থেকে শিল্প উৎপাদন থেকে সেবা খাতে সেনাবাহিনী শত শত ধরনের ব্যবসা আছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয়ের ৩০ শতাংশের বেশি তাদের পেছনে খরচ হয়- যার মধ্যে প্রতিরক্ষা বাজেট, বড় অংকের পেনশন ভাতা আছে।"

এছাড়া বেসরকারি ব্যবসা-বাণিজ্যেও জড়িয়ে আছে সেনাবাহিনী।

"সেনাবাহিনী যেসব প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে তার মধ্যে কৃষি, শিক্ষা, সার কারখানা রয়েছে। তারা সমাজকে এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে। সেনাবাহিনী শিক্ষা খাতে আছে, তার মাধ্যমে তাদের প্রচার করা ন্যারেটিভটা হচ্ছে যে সেনাবাহিনী হচ্ছে একমাত্র বাহিনী যারা দেশকে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক শত্রুদের থেকে রক্ষা করছে। এবং মানুষ সেটা বিশ্বাস করে," বলেন ড. আয়েশা সিদ্দিকা।

পররাষ্ট্রনীতির নিয়ন্ত্রক

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতিতেও দেশটির সেনাবাহিনীর প্রভাব ব্যাপক। বলা হয়ে থাকে শত্রু কিংবা মিত্র যেমনই হোক, বহির্বিশ্বের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্ক কেমন হবে তা নির্ধারিত হয় দেশটির সেনা সদর দফতরে।

এমনকি পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে বহির্বিশ্বের সাথে দেশটির সম্পর্ক নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতেও দেখা যায়। যেমন ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট শুরু হলে, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন সমর্থনযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছিলেন দেশটির সেনাপ্রধান কামার বাজওয়া।

কিন্তু ইমরান খান সেসময় রাশিয়া সফরে ছিলেন এবং তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর চাওয়া অনুযায়ী তক্ষুনি যুদ্ধের ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি ছিলেন না।

বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা থাকলেও দেশটির সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা পররাষ্ট্রনীতিতে সেনাবাহিনীর প্রভাবকে যৌক্তিক বলে মনে করেন।

পাকিস্তানের সাবেক সামরিক কর্মকর্তা এবং করাচী কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স এর চেয়ারম্যান ইকরাম সেহগাল বলছেন, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতিতে আর্মি সব সময়ই প্রভাবশালী ছিল, এটা নতুন কিছু নয়। এমনকি যখন পাকিস্তান আর বাংলাদেশ একসাথে ছিল তখনও আর্মি প্রভাবশালী ছিল।

তিনি বলেন, "এর কারণও আছে। কারণ আপনাকে বুঝতে হবে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি নির্ভর করে আপনি গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে কী তথ্য পাচ্ছেন। আর ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি যে তথ্য পায় সেটা তারা সরকারের কাছে পৌঁছে দেয়। আর ক্ষমতাসীন সরকারও তথ্য চাইবে সেনাবাহিনীর কাছ থেকে।"

"সেনাবাহিনীর যে গোয়েন্দা সংস্থা, তাদের খুবই সংগঠিত সেটআপ বা ব্যবস্থা আছে যা দিয়ে তারা খবর সংগ্রহ করে এবং সেগুলো বিশ্লেষণ করে। এরপর তারা সেটি পররাষ্ট্র দফতরে পাঠায়, তারা পররাষ্ট্র দফতরের সাথে খুব নিবিড়ভাবে কাজ করে," বলেন মি. সেহগাল।

গণতন্ত্রের জন্য হুমকি কি?

বিশ্লেষকেরা বলছেন, কোন সমাজে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার পূর্বশর্ত হচ্ছে, কোন ধরনের কর্তৃত্ব বা নিয়ন্ত্রণ ছাড়া জনগণের কাছে জবাবদিহিতার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা, যা পাকিস্তানের ইতিহাসে অনুপস্থিত ছিল বরাবর।

মূলত এটি কোন দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কিত, যার অন্যতম বড় নির্দেশক হচ্ছে জনগণের মধ্যে জবাবদিহিতার সেই আকাঙ্ক্ষা তৈরি হওয়া।

কিন্তু পাকিস্তানের সমাজ সামরিক সরকারের কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জ করার খবর শোনা যায় না।

বিশ্লেষক আয়েশা সিদ্দিকা বলছেন, এর পেছনে কারণ হচ্ছে যখনই কোন প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের সম্ভাবনা তৈরি হয়, সেটি শক্ত হাতে দমন করা হয়।

তবে, পাকিস্তানে এর একটি পাল্টা ন্যারেটিভও আছে। যেমন অনেকে মনে করেন প্রায় দুই দশক ধরে পাকিস্তানে এখন সরাসরি সেনাবাহিনী দেশ পরিচালনা করছে না, যে কারণে কোন অভাব-অভিযোগের জন্য জনগণ রাজনৈতিক নেতৃত্বকে দায়ী করবে, সরাসরি সেনাবাহিনীকে নয়।

পাকিস্তানের সাংবাদিক এবং প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ নাসিম জেহরা বলছেন, এই কারণেই সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সেই প্রতিবাদ দেশটিতে দেখা যায় না।

মিজ জেহরা বলছে, "আমাদের অন্তত গত প্রায় দুই দশক ধরে নির্বাচিত সরকার আছে দেশে। যে জন্য জনগণকে তো সরাসরি সেনাবাহিনীর কোন সিদ্ধান্ত, যেমন মার্শাল ল' চলছে বা তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে, এমন কিছুর মুখে পড়তে হচ্ছে না। ফলে জনগণ সেনাবাহিনীর পরোক্ষ প্রভাব দেখতে পাচ্ছে, সরাসরি নয়।"

"এখন মানুষ যেটা দেখছে সেটা হচ্ছে নির্বাচিত সরকার। ফলে যখন কোন আর্থ-সামাজিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। যদি সুশাসনের ঘাটতি হয়, যদি বিচার ব্যবস্থা বা পুলিশ বাহিনীর সংস্কারের প্রশ্ন ওঠে, যদি খাদ্য ঘাটতি বা মূল্যস্ফীতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তাহলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কোন মানে হয় না। মানে সেনাবাহিনীর সমালোচনা করুন কিন্তু আপনাকে প্রতিবাদ জানাতে হবে যে সরকার ক্ষমতায় আছে তার কাছে," বলেন তিনি।

পরিবর্তন কি আসছে?

ঐতিহাসিকভাবে ৬০ এর দশকে এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেই সামরিক বাহিনী রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সমাজ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসার ফলে রাজনীতি, অর্থনীতি আর সমাজের অনেক কিছুই বদলেছে।

বদল এসেছে পাকিস্তানের সমাজেও, সেই সাথে রাজনীতিতে তাদের হস্তক্ষেপের ধরণেও। যার একটি বড় উদাহরণ দেখা গেছে এবারের সংকটের সময়, ইমরান খানের সাথে দূরত্ব তৈরি হলেও, রাজনৈতিক উত্তেজনার সময় সেনাবাহিনী জানিয়ে দিয়েছিল তারা কোন পক্ষে নেই।

সেই সাথে গত কয়েক বছর ধরে, সামাজিক মাধ্যমের কল্যাণে দেশটির তরুণ প্রজন্ম সামাজিক নানা ইস্যুতে সোচ্চার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পর্যবেক্ষকেরা।

এই তরুণদেরই অনেকে, যারা ইমরান খানের সমর্থক, তারা সেনাবাহিনীর সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এখন বিক্ষোভ করছেন রাস্তায় গত কয়েকদিন যাবত। তারা মুখর স্লোগানে বলছেন, 'চৌকিদার চোর হ্যায়'। অর্থাৎ সেনাবাহিনী চোর।

কিন্তু এই বিক্ষোভ সেনাবাহিনী কর্তৃত্ব আর প্রাধান্য কমানোর মত সক্ষমতায় কতদিনে পৌঁছাবে সে বিষয়ে নিঃসন্দেহ নন বিশ্লেষকেরা। যেমনটা বলছেন বিশ্লেষক আয়েশা সিদ্দিকা। তিনি মনে করেন, এরকম ঘটনা খুব শীঘ্র ঘটবে, এমন সম্ভাবনা কম।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

Link copied!