নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার (৩০ আগস্ট) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর ফলে বিচারিক আদালতে মামলাটি চলতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। অন্যদিকে, দুর্নীত দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ(এ এম) আমিন উদ্দিন। অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদি হাছান চৌধুরী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে, চলতি বছরের ৯ আগস্ট শুরু হয় মামলা বাতিল চেয়ে আবেদনের শুনানি। গত ১৬ আগস্ট খালেদা জিয়ার আবেদনের পরবর্তী শুনানির জন্য ২২ আগস্ট দিন ধার্য করেন আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার শুনানি শেষে আদেশের জন্য ৩০ আগস্ট দিন ধার্য করেন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। বুধবার হাইকোর্টের এই বেঞ্চ খালেদা জিয়ার করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। এর ফলে বিচারিক আদালতে মামলাটি চলতে আর কোনো বাধা থাকলো না।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সাথে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনে দুদক।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন-তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
আসামিদের মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
আসামিদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন আল মামুন বর্তমানে কারাগারে আছেন। নাইকো রিসোর্সেস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ পলাতক রয়েছেন। অন্যরা জামিনে রয়েছেন।