বেসরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে নজিরবিহীন জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে আলোচিত পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে। এ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের দুই অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও দুই পরিচালকসহ ১৫ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। সেই সঙ্গে বেনজীর আহমেদের ৭টি পাসপোর্টের সন্ধান পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদকের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম।
বেনজীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত পুলিশের এ সাবেক মহাপরিদর্শক বেসরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে সাধারণ পাসপোর্ট তৈরি করেছেন। পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রেও আশ্রয় নিয়েছেন নজিরবিহীন জালিয়াতির। কিন্তু নবায়নের সময় ধরা পড়লে বেনজীরের সেই পাসপোর্ট আটকে দেয় পাসপোর্ট অধিদপ্তর। চিঠি পাঠানো হয় র্যাব সদর দপ্তরে। কিন্তু অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে সব ব্যবস্থা করে ফেলেন সাবেক আইজিপি। পাসপোর্ট অফিসে না গিয়ে নেন বিশেষ সুবিধাও।
অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে গত ৬ জুন বেনজীর আহমেদকে এবং ৯ জুন তার স্ত্রী জীশান মীর্জা ও দুই মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকে তলব করা হয়। কিন্তু এর আগেই বেনজীর আহমেদ স্বপরিবারে বিদেশে চলে গেছেন বলে গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরে বেনজীরের পক্ষে তার আইনজীবী ১৫ দিনের সময় চাইলে ২৩ জুন তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে বলা হয়। আর তার স্ত্রী ও মেয়েদের দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে ২৪ জুন ।
এ বিষয়ে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন বলেন, “বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবার আইনজীবীর মাধ্যমে দুদক চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। এবারের চিঠিতে নতুন করে সময়ের আবেদন করেননি। লিখিত বক্তব্যে তার অভিযোগগুলোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।”
উল্লেখ্য, বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় ৬২১ বিঘা জমি, ঢাকার গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব, ১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ৩টি বিও হিসাব (শেয়ার ব্যবসা করার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) এবং ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রের সন্ধান পেয়েছে দুদক। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব সম্পদ জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।