অক্টোবর ২৮, ২০২৩, ০২:১০ এএম
যাত্রাবাড়ির সাদ্দাম মার্কেট এলাকায় শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) বিকেল ৩টা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে যাত্রাবাড়ি থানার পুলিশ সদস্যদের গাড়ি তল্লাশি করতে দেখা গেছে। এ সময় বাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলসহ যানবাহন থামিয়ে মানুষের দেহ এবং ব্যাগ তল্লাশি করতে দেখা যায়।
তখন অন্তত ১৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। বিশেষ করে ঢাকামুখী প্রবেশের দূরপাল্লার আন্ত: জেলার বাসগুলোয় বেশি তল্লাশি করা হয়। শুধু তাই নয়, এখানে পথচারীদেরও তল্লাশি করা হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দূরপাল্লার বাসের সংখ্যা কমে গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) থেকে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি শুরু হয় এবং শুক্রবার (২৭ অক্টোবর)ও চলছে সেই তল্লাশি। রাজধানীর উত্তরা ও যাত্রাবাড়িতে চেকপোস্ট বসিয়ে এই তল্লাশি কার্যক্রম চালাচ্ছে র্যাব-পুলিশ।
র্যাব ও পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উত্তরার বিএনএস সেন্টারে সামনে ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কে, ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়কের ধউর চেকপোস্ট ও উত্তরার কামাড়পাড়া এলাকায় শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তল্লাশির কার্যক্রম দেখা যায়।
র্যাব ও পুলিশ সূত্র বলছে, পল্টনে আগামীকাল (শনিবার) বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এই বিশেষ তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
এ ছাড়াও উত্তরখানের তেরমুখ ব্রিজ, দক্ষিণখানের আজমপুর, আব্দুল্লাহপুর রেলগেট, কসাইবাড়ী, হাজী ক্যাম্প, বিমানবন্দরের জসিম উদ্দিন পাকার মাথা, আশুলিয়ার বিরুলিয়া ব্রিজ এলাকায় বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাত থেকে তল্লাশি কার্যক্রম শুরু হয়, যা আজ শুক্রবারও চলছে। এ ছাড়াও খিলক্ষেতের ৩০০ ফিট এলাকায়ও র্যাব-পুলিশের চেকপোস্ট লক্ষ্য করা গেছে।
উত্তরখান থানার একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) এক প্রতিবেদনে বলেন, ‘থানায় কোনো অফিসার নেই। সবাই বেরিয়ে গেছেন। বিএনপির নেতা কর্মীদের বাসা বাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে, যেন মহাসমাবেশকে ঘিরে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটাতে পারে।’
চেকপোস্ট গুলোয় ঘুরে দেখা যায়, সন্দেহজনক প্রতিটি দূর পাল্লার বাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল তল্লাশি করা হচ্ছে।
আব্দুল্লাহপুরের পলওয়েল মার্কেটের সামনে নিরাপত্তা তল্লাশি বসিয়েছে র্যাব-১। সেখানে কর্মরত ডিএডি এফ এম ইমতিয়াজ বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম সকাল থেকেই চলছে। কিন্তু পালা বদল হয়ে আমি দুপুর থেকে তল্লাশি চালাচ্ছি। পরবর্তী আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
ডিএডি ইমতিয়াজ আলী আরও বলেন, ‘তল্লাশির আওতায় প্রাইভেটকার, মাইক্রো, সিএনজি, বাস, মোটর সাইকেল রয়েছে। র্যাব-১ এর পক্ষ থেকে ৩০০ ফিট এলাকা ও মহাখালীর আমতলী এলাকাতেও চেকপোস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।’
উত্তরার বিএনএস সেন্টারের সামনের চেকপোস্টে কর্মরত উত্তরা পূর্ব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাকিবুল হক প্রতিবেদনে বলেন, ‘আমরা ঢাকার প্রবেশমুখে রেগুলার চেকপোস্ট পরিচালনা করি। আজও চেকপোস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত চেকপোস্ট থেকে কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয় নাই।’
তিনি আরও বলেন, “বাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রো, মোটরসাইকেল, যখন সেটি সন্দেহ হয় সেটি তল্লাশি করছি।”
উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী আবুল কালাম প্রতিবেদনে বলেন, ‘তেরমুখ ব্রিজ এলাকায় আমাদেরকে চেকপোস্ট চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু গতকাল (বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে) আমরা পাঁচজনকে আটক করেছিলাম।’
উত্তরার বিভিন্ন চেকপোস্ট থেকে ও বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে মোট আটকের বিষয়ে জানতে উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম ও উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) শাহিন মির্জার সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি।
যাত্রাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুল আলম এক প্রতিবেদনে বলেন, ‘এ অভিযান আমাদের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। যাদেরকে সন্দেহ হয় তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যারা নির্দোষ তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।’