উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আঘাত হানার আগেই পণ্যবাহী বড় বড় জাহাজগুলো নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য গভীর সমুদ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, যে সমুদ্র থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’-এর উৎপত্তি সেই সমুদ্রেই কেন আশ্রয়ের জন্য বড় বড় জাহাজগুলো পাঠানো হলো। গভীর সমুদ্রে এসব জাহাজ পাঠানোর বেশ কিছু কারণ আছে।
প্রথম কারণ: বন্দরের কাছাকাছি থাকলে প্রবল ঢেউয়ের কারণে জাহাজের সঙ্গে জাহাজের কিংবা জাহাজের সঙ্গে বন্দরের ও বিভিন্ন স্থাপনার সংঘর্ষ হতে পারে।
১৯৯১ সালে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের সময় জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ভেঙে যায় কর্ণফুলী নদীর শাহ আমানত সেতুর মাঝখানের বড় একটি অংশ। সেতুর ভাঙা অংশ নদীতে তলিয়ে যায়।
দ্বিতীয় কারণ: বন্দরে রাখার পর যদি ঝড়ের কারণে জাহাজ ডুবে যায় কিংবা ভেঙে যায় তখন কিন্তু নৌ চলাচল ব্যহত হবে। কারণ এই জাহাজ সরাতে কিন্তু অনেক সময় লাগবে সেই সঙ্গে এটা প্রচুর ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে। আবার সরাতে গিয়ে জাহাজের তলা ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
২০১৭ সালের ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চট্টগ্রামের আনোয়ারা সৈকতে ক্রিস্টাল গোল্ড নামে একটি জাহাজ আটকা পড়ে। পরবর্তীতে সেটা আর সমুদ্রে নেওয়া সম্ভব হয়নি। ১৯২ মিটার দৈর্ঘের এই জাহাজ দীর্ঘদিন সেখানে আটকে ছিল। ফলে প্রায় আধা কিলোমিটার জায়গায় পলি জমে যায়। ২০২১ সালে জাহাজটি কেটে ফেলা হয়।
তৃতীয় কারণ: বড় জাহাজে দুটি ইঞ্জিন কার্যকর থাকে যার ফলে জাহাজ সমুদ্রে গিয়ে ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে পারে। দুটি ইঞ্জিন থাকায় নাবিকরাও নিদিষ্ট গতিতে চালাতে পারে।
চতুর্থ কারণ: বড় বড় জাহাজে ব্যালেন্স ট্যাংকি থাকে। সমুদ্রে প্রতিকূল অবস্থা তৈরি হলে এসব ট্যাংকি পানি দিয়ে পূর্ণ করা হয়। ফলে জাহাজ ঝড়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে পারে।
পঞ্চম কারণ: ঝড়ের গতিপথ থেকে দূরে সরে গিয়ে জাহাজ গভীর সমুদ্রে টিকে থাকতে পারে।