ফ্রিদা কাহলো: বিশ্বশিল্প ও নারীবাদী আন্দোলনের এক চিরকালীন প্রতীক

ইউএনবি

ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ০৭:০২ পিএম

ফ্রিদা কাহলো: বিশ্বশিল্প ও নারীবাদী আন্দোলনের এক চিরকালীন প্রতীক

শিল্পজগতে ফ্রিদার স্থান আজ কেবল সৃজনশীলতার কারণে নয়; তিনি নারীর ক্ষমতায়ন, আত্মস্বীকৃতি ও দেহ-মন রাজনীতির এক বিশ্বজনীন প্রতীক। ছবি: সংগৃহীত

মেক্সিকোর চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলো কেবল একটি শিল্পীর নাম নয়; তিনি নারীর স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত সংগ্রাম ও আত্মপ্রকাশের এক প্রতীক হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।

১৯০৭ সালের ৬ জুলাই মেক্সিকো সিটির কায়োআকান অঞ্চলে জন্ম নেওয়া ফ্রিদা শিশুকাল থেকেই দুর্বল স্বাস্থ্য, পোলিও আক্রান্ত পা ও খেলাধুলায় অস্বাভাবিক আগ্রহের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছেন।

ফ্রিদার বাবা গুইলার্মো কাহলো একজন জার্মান বংশোদ্ভূত ফটোগ্রাফার এবং মা মাতিল্দে কালদেরন ই গনজালেস আংশিক আমেরিন্ডিয়ান ও স্প্যানিশ বংশোদ্ভূত। চার বোনের মধ্যে তৃতীয় ফ্রিদার পরিবার ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য তার শিল্পচেতনার ভিত্তি গড়ে তোলে।

শিক্ষাজীবনে ফ্রিদা প্রথমে স্থানীয় স্কুলে এবং পরে ন্যাশনাল প্রিপারেটরি স্কুলে ভর্তি হন, যেখানে তিনি চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়ন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ১৮ বছর বয়সে ঘটে যাওয়া এক মারাত্মক বাস দুর্ঘটনা তার জীবনকে চিরতরে বদলে দেয়। মেরুদণ্ড, পেলভিস ও পায়ে গুরুতর আঘাতের পর দীর্ঘ সময় বিছানায় পড়ে থাকতে হয় তাকে। আর সেই সীমাবদ্ধ সময়েই শুরু হয় তার শিল্পচর্চার অবিস্মরণীয় যাত্রা।

ফ্রিদা নিজের ভাঙাচোরা শরীর, তীব্র যন্ত্রণা এবং আবেগকে ক্যানভাসে রূপ দেওয়ার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশের এক অনন্য ভাষা তৈরি করেন। তার কাজগুলোতে মেক্সিকান সংস্কৃতি, নারীর অভিজ্ঞতা, দুঃখ, শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা এবং আত্মপরিচয়ের রাজনৈতিক প্রশ্নই বারবার দেখা যায়। যদিও অনেকে তাকে সুররিয়ালিস্ট বলে অভিহিত করেন, ফ্রিদার নিজের ভাষায়, ‘আমি স্বপ্ন আঁকি না, আমি আঁকি আমার বাস্তবতা।’

চার বোনের মধ্যে তৃতীয় ফ্রিদার পরিবার ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য তার শিল্পচেতনার ভিত্তি গড়ে তোলে। ছবি: সংগৃহীত
Link copied!