পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কন্ঠে সুকান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ২৫, ২০২২, ১০:৫২ পিএম

পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কন্ঠে সুকান্ত

বাংলাদেশের বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুর ১২ টার দিকে মিনিটে মাওয়া পয়েন্টে নির্ধারিত টোল পরিশোধের মাধ্যমে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “কারও বিরুদ্ধে আমার কোনও অনুযোগ নেই। আমরা নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা দেশবাসীকে নিয়ে সব সমস্যা মোকাবিলা করে যাচ্ছি।’’

এরপরই কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের একটি বিখ্যাত কবিতা থেকে দুটি লাইন শোনান, ‘‘জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়। আমরা মাথা নোয়াইনি, আমরা মাথা নোয়াব না। জাতির পিতা আমাদের মাথা নোয়াতে শেখাননি।’’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়েই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার কয়েক কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হলো। দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু শুধু দেশের আত্মনির্ভরশীলতা বা আত্মমর্যাদাই বৃদ্ধি করেনি বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান উঠে এসেছে এক অনন‌্য উচ্চতায়।

প্রায় ২২ বছর আগে ২০০১ সালের ৪ জুলাই বাংলাদেশের এ যাবতকালের সবচেয়ে বৃহৎ অবকাঠামো পদ্মা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন ওই সময়ের ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ উদ্বোধন করলেন পদ্মা সেতুর। পদ্মা সেতুর অবকাঠামো, ভিত্তি প্রস্থর এবং উদ্বোধনী ফলক বিভিন্ন মেয়াদে ও বিভিন্ন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর দায়িত্ব পালনের স্মৃতি বহন করবে।

শেখ হাসিনা দুই দশক আগে পদ্মা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ওই সময় দেশের বৃহত্তম এ সেতু বিদেশি দাতা সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় নির্মাণ করা হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। তখন শেখ হাসিনা সাহায্য-সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার প্রেক্ষিতে সম্ভাব্য দাতা সংস্থাগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। তবে বিশ্বব্যাংকসহ অর্থলগ্নীকারি  বিভিন্ন আন্তর্জাতিক  প্রতিষ্ঠান সরে গেলে পদ্মা সেতুর নির্মাণ চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়ে।

তবে বিভিন্ন বাধা বিপত্তি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আর দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে পুরোপুরি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তার এই সাহসিকতাপূর্ণ পদক্ষেপ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ টি জেলার কোটি কোটি মানুষের জন্য আশির্বাদ।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মূল সেতুর পাইলিং ও নদীশাসনের কাজ উদ্বোধন করেন। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হতে শুরু করে পদ্মা সেতুর কাঠামো। এরপর একে একে সব ধাপ পেরিয়ে পদ্মার বুকে ৪২টি পিলারের ওপর দৃশ্যমান হয়ে ওঠে স্বপ্নের সেতু।

Link copied!