মে ৫, ২০২৪, ১২:০৮ পিএম
পৃথিবীর প্রায় সব ধর্মেই আয়ের অর্থ দান বা জনহিতকর কাজে ব্যয়ের কথা বলা হয়েছে। আর ইসলাম ধর্মেও নানা রকম দানের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি যাকাতকে পাঁচটি মূল স্তম্ভের একটি বলা হয়েছে। তার পাশাপাশি রাসূলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবাইকে পরিবেশের প্রতি সংবেদনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে যাকাতের অর্থ দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা যায় কিনা তা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। তবে ইন্দোনেশিয়ার উলামা কাউন্সিল সস্প্রতি একটি ফতোয়ায় বলেছে, “যাকাতের টাকা দিয়ে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এছাড়া গাছ লাগানোর জন্য জমি বা অর্থ দেওয়া যেতে পারে।”
“আমরা আশা করছি মানুষ এখন জানবে যে, জলবায়ু পরিবর্তন যে বাস্তব- সে বিষয়ে আলেম-ওলামারা একমত এবং আমাদের ধর্মগ্রন্থ মানুষের ভবিষ্যৎ রক্ষায় সহায়তা করার শিক্ষা দেয়” বলে রয়টার্সকে জানান ওলামা কাউন্সিলের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিভাগের প্রধান হায়ু প্রাবোয়ো।
অন্যদিকে বাংলাদেশের বরইকান্দি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও মানবাধিকারকর্মী মো. রিয়াজ উদ্দীন রয়টার্সকে বলেন, “ইসলামের দৃষ্টিতে ভালো মানুষ হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হল অন্য মানুষ ও পরিবেশের প্রতি ভালো আচরণ করা। জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যারা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে আছেন, তাদের সহায়তায় যাকাত, সদকার টাকা ব্যবহার করা যেতে পারে।”
বাংলাদেশে যাকাত হিসেবে প্রতি বছর ৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার তোলা সম্ভব। ২০২৩ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণার বরাত দিয়ে প্রতিবেদন লিখেছে ঢাকা পোস্ট। অন্যদিকে এপ্রিলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ুমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জলবায়ু অভিযোজনের জন্য বাংলাদেশের বছরে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটারএইড এরই মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও মালিসহ কয়েকটি দেশে লবণাক্ত প্রবণ এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্প শুরু করেছে। যার ব্যয় আসছে যাকাতের অর্থ থেকে।
বাংলাদেশে সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, “আমরা যুক্তরাজ্যের মতো দেশ থেকে যাকাতের মাধ্যমে অনেক অর্থ সংগ্রহ করি, যেটা দিয়ে জলবায়ু সংকটে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হয়।”