বাংলাদেশ ইস্যুতে ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে যা আছে; কী বলছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর?

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

জুন ১৬, ২০২৩, ১২:১৯ এএম

বাংলাদেশ ইস্যুতে ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে যা আছে; কী বলছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর?

সংগৃহীত ছবি

অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠুভাবে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পদক্ষেপ চেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে চিঠি দিয়েছে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির ছয় কংগ্রেসম্যান।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ওই চিঠি পাঠানোর বিষয়টি এক টুইট বার্তায় নিশ্চিত করেন কংগ্রেসম্যান উইলিয়াম আর কিটিং।

চিঠিতে স্বাক্ষর করা অপর পাঁচ সদস্য হলেন- জেমস পি ম্যাকগভার্ন, বারাবারা লি, জিম কস্টা, ডিনা টাইটাস ও জেমি রাসকিন।  ৮ জুন দেয়া ওই চিঠিতে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বেগ জানানো হয়।

এর আগে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে লেখা চিঠিতে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানান অন্য ছয় কংগ্রেসম্যান।

৬ কংগ্রেসম্যানের বিবৃতিতে কী আছে?

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনকে সাম‌নে রে‌খে মানবাধিকার পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটনায় তারা উদ্বিগ্ন। এ প‌রি‌স্থি‌তিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে ভূমিকা রাখার পাশাপা‌শি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় অব্যাহতভাবে জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য এজেন্সির প্রতি আহ্বান জানাতে অনুরোধ করেছেন তারা।

চি‌ঠি‌তে আরও উল্লেখ করা হয়, নির্বাচনকে সামনে রেখে এই ধর‌নের পদ‌ক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ইতোমধ্যে বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার ও সহিংসতা শুরু হয়েছে।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বাহিনীটির বর্তমান ও সাবেক সাত কর্মকর্তার ওপর দেশ‌টির দেওয়া নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ তুলে চিঠিতে বল‌া হয়, র‌্যা‌বের ওপর নি‌ষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরও বাংলাদেশে দমন–পীড়ন কমেনি। 

যুক্তরা‌ষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্ট ২০২২-এ বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তু‌লে ধ‌রে চিঠিতে বলা হয়,  বাংলা‌দে‌শে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অধিকার ৩১টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ২১টি জোরপূর্বক গুম, জেলে ৬৮টি মৃত্যু এবং র‌্যাব, ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চ ও একটি এজেন্সি দ্বারা ১৮৩ জন সাংবাদিকের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। এসব বিষ‌য়ে প্রামাণ‌্য ডকু‌মেন্ট থাকার পরও বাংলা‌দে‌শ সরকা‌রের কর্মকর্তারা অব‌্যাহতভা‌বে তা প্রত‌্যাখ্যান ক‌রে যা‌চ্ছেন।

এমন পরিস্থিতিতে সুশীল সমাজ, মানবাধিকারকর্মী এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ভুক্তভোগীদের রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা ওই চিঠিতে জানতে চেয়েছেন ছয় কংগ্রেসম্যান।

মার্কিন প্রেসিডেন্টকে লেখা ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে কী অছে?

এর আগে মার্কিন কংগ্রেসের অপর ছয় সদস্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে লেখা চিঠিতে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির সমালোচনা করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষ যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন, সে সুযোগ সৃষ্টির জন্য প্রেসিডেন্টকে ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান। এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এবং দায়ী ব্যক্তিদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের অনুরোধ করেন রিপাবলিকান পার্টির ছয় কংগ্রেসম্যান। চলতি বছরের ২ জুন ভার্জিনিয়ার কংগ্রেস সদস্য বব গুড প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে লেখা ওই চিঠি নিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেন। ওই চিঠিতে স্বাক্ষরদানকারী অন্য পাঁচ কংগ্রেস সদস্য হলেন স্কট পেরি, ব্যারি মোর, ওয়ারেন ডেভিডসন, টিম বুরচেট ও কিথ সেলফ। তাঁরা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির সদস্য।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর কী বলছে?

এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে পাঠানো কংগ্রেসম্যানদের চিঠি সম্পর্কে এখনও অবগত নন, বলে জানিয়েছে দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্ট। 

স্টেট ডিপার্টমেন্ট মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন , ‘আমি চিঠির বিষয়ে কিছু জানি না। কংগ্রেসম্যানদের থেকে যে সব চিঠি পাওয়া যায়, গোপনেই সেগুলোর প্রতিক্রিয়া দেয়া হয়। এ বিষয়ে কোনো তথ্য পেলে গোপনীয়ভাবে তার সমাধান করা হবে। এ সময় বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশে যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চায় বলে জানান মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র।

Link copied!