সাপের কামড়: কুসংস্কারে বছরে ঝরে ৬ হাজার প্রাণ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ১৭, ২০২১, ০৩:১৯ এএম

সাপের কামড়: কুসংস্কারে বছরে ঝরে ৬ হাজার প্রাণ

সাপের কামড়ের বৈজ্ঞানিক ও আধুনিক চিকিৎসা থাকলেও এখনও অনেকেই ওঝা, ঝাড়ফুঁকে ভরসা করার কারণে বছরে প্রায় ৬ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে যাওয়া, বাড়ি পরিষ্কার রাখাসহ নানা নিয়ম পালন করলে সাপেড় কামড়ে মৃত্যুর পরিমাণ কমবে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা। ১৬ জুলাই (শুক্রবার) বিশ্ব সাপ দিবস।

দেশে সাপের কামড়ের শিকার ৬ লাখ

দেশে প্রতিবছর আনুমানিক ছয় লাখ মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হন। আর সাপের কামড়ে মারা যান ছয় হাজার মানুষ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, বন্যার সময় পানিতে ডুবে মৃত্যুর পর মানুষের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ সাপের কামড়। আর বিষধর সাপ কামড়ানোর পর বেঁচে যাওয়া অনেকেই বিভিন্ন ধরনের পঙ্গুত্ববরণ ও মানসিক সমস্যায় ভোগেন।

পাঁচ ধরনের বিষাক্ত সাপ

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য মতে বাংলাদেশে সাধারণত পাঁচ ধরনের বিষাক্ত সাপ রয়েছে। এগুলো হলো- গোখরা, কেউটে, চন্দ্রবোড়া, সবুজ সাপ ও সামুদ্রিক সাপ। ‘সর্প দংশনের চিকিৎসা নীতিমালা ২০১৯’ অনুযায়ী অ্যান্টিভেনম আনুষঙ্গিক চিকিৎসা, কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা অনুসরণ করা হয়ে থাকে। বর্ষাকালে সাপের কামড়ের সংখ্যা বেড়ে যায়। তবে চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে অ্যান্টিভেনম রয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন। তিনি বলেন, যেসব অঞ্চলে সাপের কামড়ে মানুষের মৃত্যু হয় সেসব অঞ্চলে যদি সাপে কাটার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুতগতিতে অ্যান্টিভেনম দেওয়া যায় তাহলে অবশ্যই সাপের কামড়ে মৃত্যু কমানো সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বাংলাদেশের সব উপজেলা স্বাস্থ্য উপজেলা কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনমের চাহিদা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং ইতিমধ্যে দেশের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভ্যানম পাঠানো হয়েছে। আর যদি কোনও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা সদর হাসপাতাল অ্যান্টিভেনম না পেয়ে থাকেন তাহলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অসংক্রামক রোগ বিভাগে যোগাযোগ করার জন্যও অনুরোধ জানিয়েছ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

কুসংস্কারের কারণে মৃত্যু বাড়ছে

সাপে কামড়ালে ওঁঝা বা পীরের কাছে যাওয়া, আক্রমণ করা সাপ খোঁজা, কামড়ের বিষয়টা লুকিয়ে রাখাসহ নানা ধরনের কুসংস্কার চালু রয়েছে দেশে। যার ফলে বিষাক্ত সাপ কামড়ানোর ১৮-২০ ঘন্টা পর অনেক ওঁঝা দেখিয়ে মৃত অবস্থায় রোগীকে হাসপাতালে আনে।

চিকিৎসকরা বলছেন, বর্তমানে সাপের কামড়ের বৈজ্ঞানিক ও আধুনিক চিকিৎসা থাকলেও এখনও সাপের কামড় সম্পর্কে মানুষের মধ্যে অবৈজ্ঞানিক ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। এ নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসার চর্চা এখনও ব্যাপকভাবে শুরু হয়নি। অথচ, যদি সঠিক সময়ে এসব রোগীকে অ্যান্টিভেনম না দেওয়া হয় তাহলে অনেক রোগী মারা যেতে পারে।

Link copied!