সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২, ১১:০৬ পিএম
আশা ছিল পুত্র সন্তানের। এ কারণে সন্তান নেওয়ার চেষ্টা। এভাবে ছেলে সন্তানের আশায় একে একে হল চারটি কন্যাসন্তানের জন্ম। সেই দায় চাপানো হল সন্তানের মা শিপা বেগমের (২৯) ওপর। এ নিয়ে অসহ্য হয়ে উঠল দাম্পত্যজীবন। স্বামীর নির্যাতনও দিন দিন বাড়ছিল। অবশেষে এসব লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সহ্য করতে না পেরে শুক্রবার বিকেলে বিষপানে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন শিপা।
ঘটনাটি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের বড়কাপন গ্রামের। শিপা বেগম ওই গ্রামেরই সুমন মিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, ১০ বছর আগে জগন্নাথপুর পৌরসভার ইকড়ছই এলাকার মকদ্দুছ মিয়ার (মৃত) মেয়ে শিপা বেগমের সাথে বড়কাপন গ্রামের আব্দুল হামিদ মিয়ার (মৃত) ছেলে সুমন মিয়ার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। দাম্পত্যজীবন সুখেরই ছিল। বিয়ের প্রথম বছরেই তাঁদের প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু দ্বিতীয়বারও কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ার পর সুখের সংসারে আগুন লাগে। একটি ছেলের আশায় আরও দুটি সন্তান নেন তাঁরা। কিন্তু সে দুটিও কন্যা। একে একে চার কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ায় স্ত্রীর ওপর ক্ষিপ্ত হন সুমন মিয়া। প্রায়ই স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করতেন।
এ পরিস্থিতিতে জামাইকে সন্তুষ্ট রাখতে বছরখানেক আগে শিপা বেগমের মা মনু বেগম তাঁর সৌদিপ্রবাসী মেয়ের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ধার করে সুমনকে দেন। মাসখানেক আগে সেই টাকা ফেরত চাইলে সুমন মিয়া আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন। শিপা বেগমের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। শুক্রবার বিকেলে বিষ পান করেন শিপা। পরিবারের লোকজন তাঁকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, শিপা বেগমের মরদেহ সিলেট হাসপাতালে রয়েছে। সেখানে ময়নাতদন্ত করা হবে। অভিযোগ অনুসারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।