জানুয়ারি ৮, ২০২২, ১২:৫৪ পিএম
দীর্ঘদিন নিজের সন্তানের মতো পালিত শিয়ালকে হঠাৎ করে বনবিভাগের লোকজন নিয়ে যাওয়ায় কান্না যেনো থামছেই না এক গৃহবধূর। তাই নিজের পোষা শেয়ালের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর কার্যালয় পর্যন্ত ছুটে যান ওই নারী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে দুই শিশু সন্তানসহ কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
এমন ঘটনা ঘটেছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর ফলকন গ্রামে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এক বছর আগে খুব ছোট অবস্থায় এক ব্যক্তির কাছ থেকে দুটি শিয়াল শাবক কিনে পালন শুরু করেন বেদে বধূ হাসিনা আক্তার। এর কয়েক দিন পরই একটি মারা যায়। খুব আদর-যত্নে অন্য শিয়ালটিকে লালন করে বড় করে তুলেছেন। এই এক বছরে হাসিনার দুই প্রতিবন্ধী শিশুও শিয়ালটির বন্ধু হয়ে ওঠে। কিন্তু খাঁচায় বন্য প্রাণী লালন-পালন অপরাধ হওয়ায় খবর পেয়ে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ এসে শিয়ালটি নিয়ে যায়।
পালিত শিয়ালের শোক সামলাতে না পেরে ওই নারীও বনকর্মকর্তাদের পেছনে পেছনে ছুটে যান উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে। এ সময় ওই নারীর প্রতিবন্ধী দুই শিশুও ছুটে আসে। আসতে আসতে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই গৃহবধূ।পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা ওই নারীকে বুঝিয়ে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
গৃহবধূ জানান, খুব ছোট অবস্থায় তিনি এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২টি শিয়াল শাবক কিনে পালন করছিলেন। কিন্ত কয়েক দিন পর একটি শাবক মারা যায়। পরে বাকি একটিকে তিনি লালন পালন করে বড় করেন। তার দুই প্রতিবন্ধী শিশু ঐ শিয়ালটির বন্ধু হয়ে ওঠে। কিন্তু হঠাৎ করে তাদের খেলার সাথীকে নিয়ে যাওয়ার পর শিশু দুটি কান্নায় ভেঙে পড়ে। শিশু দুটি বিষয়টিকে মেনে নিতে পারছে না কোনোভাবেই।
গৃহবধূ বলেন, শাবক শিয়ালটি লালন পালনে অনেক টাকা-পয়সা খরচ হয়েছে। কারণ তার সন্তানদের মতো করে লালন পালন করেছেন।
উপজেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদের গণমাধ্যমে জানান, বন্যপ্রাণীদের খাঁচায় বন্দী করে লালন পালন করা অপরাধ। একারণে শেয়ালটিকে উদ্ধার করে রাতেই বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জমান বলেন, আমরা জানতে পারি ওই গৃহবধূ শিয়ালটিকে আটকে রেখেছেন। পরে তার বাড়িতে গিয়ে শিয়ালটিকে উদ্ধার করি এবং গৃহবধূকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেই।