জেলা প্রশাসক বা ডিসিদের যত সুযোগ সুবিধা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪, ০৯:০০ পিএম

জেলা প্রশাসক বা ডিসিদের যত সুযোগ সুবিধা

প্রশাসন ক্যাডারে বর্তমানে ১ হাজার ৫৯৩ জন উপসচিব পদে কর্মরত রয়েছে। যাদের মধ্যে মাত্র ৬৪ জন ডিসি হতে পারবে।

গত ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে হাতাহাতি,মারামারি করছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। বিষয়টা দেখতে অপ্রীতিকর হলেও মূলত জেলা প্রশাসক বা ডিসি হতেই এই ধরনের কর্মকান্ড ঘটিয়েছেন তারা। কিন্তু ঠিক কি কারনে ডিসি হতে সবাই উদগ্রীব। কি কি সুবিধা পায় একজন ডিসি । আর ক্ষমতার পরিধিই বা কতটুকু।

জেলা প্রশাসক বা ডিসি হচ্ছেন একটি জেলার কর্ণধার। তিনি একই সাথে তিনটি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একাধারে জেলা প্রশাসকতো বটেই সেই সাথে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা কালেক্টর ও ডেপুটি কমিশনার। প্রশাসন ক্যাডারে বর্তমানে ১ হাজার ৫৯৩ জন উপসচিব পদে কর্মরত রয়েছে। যাদের মধ্যে মাত্র ৬৪ জন ডিসি হতে পারবে।

একজন ডিসি বর্তমানে পঞ্চম গ্রেডে বেতন ভাতাদি পান। পঞ্চম গ্রেডে একজন ডিসি মূল বেতন সর্বোচ্চ হতে পারে ৬৯ হাজার ৮৫০ টাকা মাত্র। একজন জেলা প্রশাসকের বেতনের বাহিরেও লিগ্যাল ওয়েতেই বহু ইনকামের খাত রয়েছে। তিনি পদাধিকার বলে জেলাভেদে গড়ে ১২০ টি কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সেই সকল কমিটির মিটিংয়ে উপস্থিত থাকলে এবং বিভিন্ন স্পট ভিজিটিং করলেও সরকার থেকে নির্ধারিত পরিমাণ সম্মানি পেয়ে থাকেন।

এছাড়া বাংলাদেশে মোট ৪৩ টি মন্ত্রনালয়ের ৫৮ টি বিভাগের জেলা ভিত্তিক সকল কার্যক্রম একজন ডিসির তত্ত্ববধায়নে হয়ে থাকে। সেই সাথে ডিসির কার্যাদেশে ৬২ টি খাতে ৩০০ টিরও বেশি কার্যক্রম পালন করার নির্দেশনা দেয়া আছে। সেই সাথে বাড়তি অর্পিত দায়িত্বও তার অধীনস্থ। শুধু প্রশাসনিক কর্মকান্ডই নয় বরং রাজস্ব ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব থাকে একজন ডিসির কাছে।

সেই সাথে জেলায় পরিস্থিতি সামাল দিতে ১৪৪ ধারা জারি করার এখতিয়ার রয়েছে ডিসির। বিশেষ আইনের আওতায় কাউকে আটকের আদেশ দিতে পারেন তিনি। এমনকি পুলিশ বিভাগের ওপর সাধারণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে ডিসির ওপর।

এদিকে জেলায় অস্ত্রের লাইনেন্স দেয়া, রাষ্ট্রের গোপনীয় ফাইল বিভিন্ন কার্যালয়ে স্থানান্তর করার দায়িত্ব ডিসির। এদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নবায়ন ডিসির মাধ্যমেই হয়। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় যে কোন কাজে জেলা ভিত্তিক সব দায়িত্বে ডিসি অফিসের ভূমিকা থাকে।

ওয়ারেন্ট ও প্রেসিডেন্স ১৯৮৬ অনুসারে একজন উপ সচিবের পদমর্যাদা ক্রম ২৫ তম হলেও জেলা প্রশাসকের পদমর্যাদা ২৪ তম। যার ফলে পদ এক থাকলেও পদক্রমে ডিসি একধাপ এগিয়ে।

এখন প্রশ্ন আসে ডিসিদের এত ক্ষমতা কেন

বর্তমানের জেলা গুলো কিন্তু মুঘল আমলে শেরশাহ সর্বপ্রথম কর আদায় ও শাসন ব্যবস্থার সুবিধার লক্ষ্যে নামকরণ করেছিলেন "সুবাহ" বা প্রদেশগুলোকে সরকারে ভাগ করেছিলেন।

সেখানে আমীর কর আদায় করত,কাজী বিচার করত আর ফৌজদার শান্তি রক্ষায় কাজ করত।ব্রিটিশ আমলে ডেপুটি কমিশনারের হাতে বিচারকার্য,প্রশাসন পরিচালনা ও কর আদায়ের দায়িত্ব অর্পিত হয়।যে ধারা এখন অবধি কার্যত রয়েছে।এ পদ কার্যকরী হয় ১৭৬৯ সালে আর সুপ্রতিষ্ঠিত হয় ১৭৯০ সালে। ফলে সেই ব্যবস্থাই বর্তমানে রয়ে গিয়েছে।

এদিকে বিভিন্ন সময়ে ডিসি সম্মেলন করা হলে সেখান থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাবে ডিসিদের ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে দেয়ার দাবি আসে। ফলে ধীরে ধীরে সেই দাবি বাস্তবায়নের ফলে ডিসিদের কাজের পরিধি আরও বেড়ে যায়।

Link copied!