দুর্নীতির অভিযোগে আট উপদেষ্টার কড়া সমালোচনা সাবেক সচিবের

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ৯, ২০২৫, ০২:০৭ পিএম

দুর্নীতির অভিযোগে আট উপদেষ্টার কড়া সমালোচনা সাবেক সচিবের

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব ও অবসরপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এ বি এম আব্দুস সাত্তার বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আটজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে তার কাছে দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে। তিনি জানান, এই উপদেষ্টাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ ও বদলি করা সম্ভব নয়।

শুক্রবার ঢাকার বিয়াম মিলনায়তনে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও আগামী দিনের জনপ্রশাসন শীর্ষক সেমিনারে এসব অভিযোগ করেন তিনি। তবে তিনি উপদেষ্টাদের নাম প্রকাশ করেননি।

বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৮২ ব্যাচের এ কর্মকর্তা বর্তমানে অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সভাপতি।

সাত্তার বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার কাছে আটজন উপদেষ্টার দুর্নীতির প্রমাণ থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি এক উপদেষ্টার এপিএস অ্যাকাউন্টে ২০০ কোটি টাকা থাকার তথ্য তুলে ধরেন এবং গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলো অনভিজ্ঞ উপদেষ্টাদের হাতে দেওয়া হয়েছে বলে সমালোচনা করেন।

তিনি আরও জানান, গত এক বছরে দুর্নীতি বেড়েছে; এক সহকারী কমিশনার ভূমি নামজারির জন্য ৩০ লাখ টাকা, আরেকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কারখানা লে-আউট অনুমোদনের জন্য ২০ লাখ টাকা চেয়েছেন।

সাত্তার বলেন, গত বছর ৫ আগস্টের পর একটি রাজনৈতিক দলের অফিসে হাজারো কর্মকর্তা-কর্মচারী ন্যায়বিচারের আশায় সমবেত হন, তবে পার্টির নেতৃত্ব তাদের প্রবেশে বাধা দেয়। পরে তিনি অফিসে ইন-সার্ভিস কর্মকর্তাদের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা দেন।

সাত্তার এর বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সাবেক সচিব ও বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের রেক্টর এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, তিনি একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি, যার কাছে যথাযথ প্রমাণ রয়েছে এবং সরকারের উচিত সংশ্লিষ্ট আটজন উপদেষ্টাকে চিহ্নিত করা।

সেমিনারে বিগত সরকারের ১৫ বছর ধরে প্রশাসন ক্যাডারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়েও আলোচনা হয়। অংশগ্রহণকারীরা ভবিষ্যতে সরকারি কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক দলের হাতিয়ার হয়ে কাজ না করার আহ্বান জানান।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, মুখ্য আলোচক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোখলেসুর রহমানসহ আরও অনেকে।

জুলাই আন্দোলনের শহীদদের আত্মীয়রাও বক্তব্যে তাঁদের সংগ্রামের ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।

সেমিনারে বক্তারা সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর মানুষের আস্থা পুনরুদ্ধার, আইনের শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং প্রশাসনকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে গুরুত্বারোপ করেন।

তারা বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছিল দীর্ঘদিনের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে জনগণের ন্যায়ের দাবির এক চূড়ান্ত প্রতিফলন।

Link copied!