আওয়ামী লীগের ইশতেহার

অর্থনীতির গতি বৃদ্ধিতে নতুন বেশ কিছু প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩, ০২:৪০ পিএম

অর্থনীতির গতি বৃদ্ধিতে নতুন বেশ কিছু প্রকল্প

ছবি: সংগৃহীত

দেশের অর্থনীতির গতি বৃদ্ধিতে নতুন নতুন প্রকল্প নেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) ঢাকার প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইশতেহার ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের এবারের ইশতেহারে জানানো হয়, সুউচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য বৃহৎ প্রকল্পের (মেগা প্রজেক্ট) গুরুত্ব অনেক। দেশের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা ছিল রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বন্দরসহ অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাব। সে লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার তিন মেয়াদে অনেকগুলো বৃহৎ প্রকল্প (মেগা প্রজেক্ট) গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। আশা করা যায়, জাতির অহংকার ও গর্বের প্রতীকপদ্মা সেতুসহ এই সকল প্রকল্প উন্নয়নের ক্ষেত্রে আশানুরূপ গতি সঞ্চার করবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বহু বড় বড় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ইশতেহারে বলা হয়, ২০২২ সালের ২৫ জুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত দেশের সর্ববৃহৎ সেতু পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধন করেন। পদ্মা সেতুর ফলে সারাদেশে অবাধ যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিরাট প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে একটি নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য, টেকসই ও সমন্বিত ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এটি এশিয়ান হাইওয়ের অংশ হবে। যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।

এতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর পদ্মা বহুমুখী সেতুর সঙ্গে সংযুক্ত রেলওয়ে উদ্বোধন করার ফলে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের অনেকগুলো জেলা রেল সংযোগের আওতায় এসেছে।

এতে আরও বলা হয়, মেট্রোরেল স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের একটি ধাপ। এর ফলে ঢাকা নগরীর অসহনীয় যানজট থেকে নগরবাসী মুক্তি পাওয়ার পাশাপাশি রাজধানীর বায়ুদূষণ ও শব্দদূষণের মাত্রা কমে আসবে। যোগাযোগব্যবস্থা সহজতর হওয়ায় অর্থনৈতিক গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে, মেট্রোরেল মানুষের কর্মঘণ্টা সাশ্রয় করবে।

এতে বলা হয়, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে ৩.৩২ কিলোমিটার টানেল নির্মাণের ফলে চট্টগ্রামের পতেঙ্গার সঙ্গে আনোয়ারাকে সংযুক্ত করে বন্দরনগরী চট্টগ্রামকে ‘ওয়ান ওয়ে, টু টাউন’- মডেলে গড়ে তোলা হয়েছে।

ইশতেহারে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।

এতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা-ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন করার মাধ্যমে বাংলাদেশ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জগতে প্রবেশ করেছে।

এতে আরও বলা হয়, ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের চ্যানেলের উদ্বোধন ও প্রথম টার্মিনালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এই বন্দর চালু হলে একই সঙ্গে কনটেইনার ও পণ্যবাহী জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারবে।

এতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর বহু প্রতীক্ষিত ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন উদ্বোধন করা হয়েছে। এ রেলপথ চালু হওয়ায় মিয়ানমার, চীনসহ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের করিডরে যুক্ত হবে বাংলাদেশ এবংকক্সবাজার একটি স্মার্ট সিটিতে পরিণত হবে।

ইশতেহারে বলা হয়, ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর এবং ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর যথাক্রমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লিপাত্র বা রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করা হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ৩৩তম রাষ্ট্র হিসেবে পারমাণবিক ক্লাবের সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর যৌথভাবে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেন। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট।

এতে বলা হয়, ২০১৮ সালের আগস্টে দেশে প্রথম এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস রূপান্তর করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করার কাজ শুরু হয়। এরপর ২০১৯ সালের এপ্রিলে দ্বিতীয় এলএনজি টার্মিনাল যাত্রা শুরু করে। কক্সবাজারের মহেশখালীরএলএনজি ফ্লোটিং স্টোরেজের প্রতিটি টার্মিনালের দৈনিক উৎপাদন (রিগ্যাসিফিকেশন) সক্ষমতা ৫০ কোটি ঘনফুট।

ইশতেহারে বলা হয়, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আন্ধারমানিক নদীর উপকণ্ঠে রাবনাবাদ চ্যানেল বরাবর গড়ে উঠেছে দেশের তৃতীয় বন্দর পায়রা সমুদ্রবন্দর। অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিশ্চিতের ফলে ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট বন্দরটিতে প্রথমবারের মতো কনটেইনার জাহাজ নোঙর করতে শুরু করে।

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলা হয়, সাশ্রয়ী অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা বিবেচনায় কিছুসংখ্যক ব্যয়বহুল প্রকল্প স্থগিত করা হয়েছে, যা যথাসময়ে পুনর্বিবেচনা করে যুক্তিসংগত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে। অর্থনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নতুন প্রকল্প বিবেচনা ও গ্রহণ অব্যাহত থাকবে।

Link copied!