নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ঘিরে সবসময়ই থাকে বিশাল কর্মযজ্ঞ। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশি ব্যাংকার ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস এদেশের মানুষের দারিদ্র্য দূরীকরণে অনন্য অবদান রেখেছেন। গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে জামানতবিহীন ক্ষুদ্র ঋণের ধারণাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছেন নোবেল জয়ী ড. ইউনূসই।
দারিদ্র্য দূরীকরণে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে জামানতবিহীন ক্ষুদ্রঋণের ধারণাকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেন তিনি। নোবেল পুরস্কারকে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানিত পুরস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে তার নিরলস লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়ে সর্বোচ্চ এই সম্মান পেয়েছেন। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানসহ ১৬ উপদেষ্টাদের পরিচয়
এই পুরস্কার ছাড়াও বিভিন্ন সময় যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’সহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
১৯৭৮-২০২১ পর্যন্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিকসহ প্রায় ১৪৫টি পুরস্কার অর্জন করেছেন নোবেল জয়ী এই অর্থনীতিবিদ।
আরও পড়ুন: শপথ নিলেন ড. ইউনূসসহ উপদেষ্টারা
এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৪৮টি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডাল গ্রহণ করেছেন। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে এই সম্মাননা দেওয়া হলো ইউনূসকে, যিনি এই পদক পাওয়া প্রথম বাংলাদেশি।
২৮ জুন তার জন্মদিনকে গত ১ দশকেরও বেশি সময় ধরে বৈশ্বিকভাবে ‘সামাজিক ব্যবসা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। নোবেল-উত্তর জীবন তিনি সমর্পণ করছেন সামাজিক ব্যবসা ধারণার প্রসার ও বাস্তবায়নে।
বিশ্বের সর্বোচ্চ সম্পদশালী দুই শতাধিক ব্যক্তির সম্মেলনে নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। ২০১৩ সালে ৫ মে বুধবার জাতিসংঘ ভবনে এই সম্মাননা জানানো হয়। জাতিসংঘে বিশ্বের সম্পদশালী ব্যক্তিদের এই সমাবেশের আয়োজন করে বিশ্বখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিন। একজন সামাজিক উদ্যোক্তা হিসেবে ইউনূসকে এই ‘আজীবন সম্মাননা পুরস্কার’ দেওয়া হয়।
এখন পর্যন্ত দারিদ্র্য দূরীকরণে ক্ষুদ্র ঋণ বা সামাজিক ব্যবসার এই মডেল বিশ্বের ৪০টির বেশি দেশে ১৩০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান ধারণ করে চলেছে। এ ছাড়া বিশ্বের ৮০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে তার নামে ‘ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে ড. ইউনূসের চিন্তা, কাজ, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ও তার জীবনাদর্শ নিয়ে গবেষণা হয়। গত কয়েক দশকে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক, গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ উদ্যোগ, গ্রামীণ সামগ্রী, গ্রামীণ শক্তিসহ গড়ে তুলেছেন অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান।