সিনেমার ইতিহাসে সুন্দরীদের তালিকায় যার নাম সবার শীর্ষে, তিনি হলেন মেরিলিন মনরো। যার হাসি, চোখের চাউনিতে আজও বুঁদ হয়ে আছে পুরো বিশ্ব। একাধারে মার্কিন অভিনেত্রী, মডেল এবং গায়িকা এক দশকের বেশি সময় ধরে শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রীর আসন ধরে রেখেছিলেন মনরো। মৃত্যুর অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় পরেও এখনও জনপ্রিয় একজন স্টাইল আইকন হিসাবে মানা হয় এই তারকাকে। আজ এই গ্ল্যামারাস সেলিব্রেটির ৫৯ তম মৃত্যুবার্ষিকী।
কিন্তু মৃত্যুর ৫৯ বছর পরেও তো থামেনি মেরিলিন মনরো আখ্যান। আজও আমেরিকার পাম স্প্রিংস আর্ট মিউজিয়ামের সামনে তার উড়ন্ত স্কার্টের ২৬ ফুট উঁচু মূর্তি নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে তার জন্ম হয়েছিল মানসিক ভারসাম্যহীন এক মায়ের কোলে। আমৃত্যু জানতে পারেননি পিতৃপরিচয়। রুপালি জগতের আলো, তার প্রতি পুরুষের গভীর আকর্ষণ- এই সব ছাড়িয়েও তিনি হলিউডের এক সফল অভিনেত্রী, গায়িকা ও মডেল।
ডেঞ্জারাস ইয়ার্স, অ্যাজ ইয়ং অ্যাজ ইউ ফিল, লেটস্ মেক ইট লিগাল, দ্য প্রিন্স অ্যান্ড দ্য শোগার্ল, মাঙ্কি বিজনেস, দ্য সেভেন ইয়ার ইচ, দুই দশকের ক্যারিয়ারে মোট ৩৪টি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
একাধিক বিয়ে, প্রেম, সম্পর্কের গুঞ্জন- ব্যক্তিগত জীবনেও কম বিতর্ক ছিল না গ্ল্যামার কুইন মেরিলিন মনরোর। ১৬ বছর বয়সে প্রথম বিয়ে করেন তিনি। তারপর আরও দুইবার বিয়ের সম্পর্কে আবদ্ধ হন মেরিলিন। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
লার্জার দ্যান লাইভ, অসম্ভব সাফল্যের আড়ালেও একাকীত্বে ভুগতেন এই অভিনেত্রী। ২৫ বছর বয়সের আগেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনবার। শোনা যায় ২৯ বছরের মধ্যে গর্ভপাত করিয়েছিলেন মোট ১২ বার।
তার ব্যক্তিগত ডায়েরিতে নাকি ৩৭ জন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের নাম পাওয়া যায়। বহুবার বাড়ি বদলেছিলেন তিনি। জড়িয়েছিলেন কেনেডি ব্রার্দাসদের প্রেমে। মনে করা হয়, সেই সম্পর্কই জীবনের ইতি টানল মেরিলিন মনরোর।
মনরো গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন প্রথমে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি এবং পরে তার ভাই রবার্ট কেনেডির সঙ্গে। তবে সম্পর্কের স্বীকৃতি পাননি কখনোই। জন কেনেডি তাকে ডাকতেন সুইট ক্যান্ডি নামে।
পরবর্তীতে লস অ্যাঞ্জেলেসের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন গ্ল্যামার কুইন। সরকারি ভাবে বলা হয় আত্মঘাতী হয়েছিলেন মনরো। তবে কেন মৃত্যুকে বরণ করলেন তিনি, কেন তার হাতে ফোনের রিসিভার ছিল, কেনই বা নগ্ন অবস্থায় চাদরের তলায় পাওয়া গিয়েছিল তাকে- এসব প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি। শুধু জানা যায়, রক্তে ছিল অস্বাভাবিক পরিমাণে ঘুমের ওষুধ।
আত্মশক্তি, নারীবাদী, ফরওয়ার্ড থিংকার- এই বিশেষণগুলো তখন শক্ত থাবা বসায়নি মানুষের মনে। আজ হয়তো মনরো থাকলে তাকে নিয়ে কাহিনি সেজে উঠত অন্যভাবে। কে বলতে পারে তখন কেবলমাত্র সেক্স সিম্বল, ব্লন্ড বম্বশেল-এর তকমায় আটকে থাকতে হত না বছর ৩৬-এর সব থেকে আকর্ষণীয় যুবতীকে।