মিঠুন চক্রবর্তী। বলিউডতো বটেই টালিউডেও দাপুটে অভিনেতা। নিজের অভিনয়ের নৈপুণ্যতায় দর্শকহৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। টালিউড ও বলিউডে সমানতালে বিচরণ রয়েছে এই ভার্সেটাইল অভিনেতার। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে কালেভদ্রে দেখা যায় এই বাঙালি অভিনেতাকে। ঢালিউড পাড়ায় খুশির খবর, আবারও ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে চলেছেন এই তারকা অভিনেতা।
যিনি ডিস্কো কিং, তিনি জিমি, তিনিই আবার ডিস্কো ডান্সার- বাঙালিবাবু মিঠুন চক্রবর্তী স্বয়ং একটি প্রতিষ্ঠান। বহু মানুষের হৃদস্পন্দন মিঠুন ৷ বাঙালির আবেগের অন্য নাম স্বয়ং এই মহাগুরু ৷ ৭১ বছরেও যেই মঞ্চে পৌঁছান সেখানেই কাঁপান। ঘুমিয়ে যে স্বপ্ন আমরা দেখি, ঠিক তা নয় স্বপ্ন। আসলে যা মানুষকে ঘুমাতে দেয়না তাই হল স্বপ্ন ৷ এই স্বপ্নই মিঠুনদা বারেবারে দেখেছেন।
১৯৮৫ সালের ঘটনা। বাংলাদেশে প্রথম অভিনয় করেছিলেন শক্তি সামন্ত পরিচালিত ‘অন্যায় অবিচার’ সিনেমায়। এটি ভারত-বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি হয়েছিল। তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন চিত্রনায়িকা রোজিনা। এরপর সর্বশেষ ২০১০ সালে ‘গোলাপি’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন মিঠুন। এর প্রায় ১৩ বছর পর ফের ঢালিউডে দেখা যাবে এই ডাকসাইটে অভিনেতাকে।
কিছুদিন আগে টলিউডে মুক্তি পেয়েছিল ‘প্রজাপতি’। বক্স অফিসে ঝড় তুলেছিল দেব-মিঠুন অভিনীত সেই ছবি। অনেক বছর পর টালিউডের ছবিতে অভিনয় করেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা। এবার প্রায় এক যুগ পর বাংলাদেশের ছবিতে অভিনয় করতে চলেছেন মেগাস্টার মিঠুন।
অতিসম্প্রতি কলকাতায় মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করেন বাংলাদেশের পরিচালক কামরুজ্জামান রোমান ও চিত্রনাট্যকার আবদুল্লাহ জহির। এরই মধ্যে তার মিঠুনের সাথে প্রাথমিকভাবে সব ধরনের আলোচনা শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের সিনেমাতে অভিনয় করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বরিশালে জন্মগ্রহণকারী এই অভিনেতা। বাবা-মেয়ের সম্পর্ক নিয়ে তৈরি হতে যাওয়া ওই ছবির নাম ‘হিরো’।
এই সিনেমার চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন আব্দুল জাহির। তিনি জানান, প্রায় তিন মাস ধরে গল্পটি নিয়ে আমাদের কথা হচ্ছিল। প্রথমে তার কাছে চিত্রনাট্য পাঠিয়েছিলাম। তার সাথে ছবির ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে সব ধরণের আলোচনা শেষ হয়েছে।
নির্মিতব্য ছবিটি সম্পর্কে আবদুল্লাহ জহির আরও বলেন, সিনেমার গল্পটি পছন্দ করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী। কথা দিয়েছেন সিনেমাটি করবেন। তবে বর্তমানে তার হাতে আরও দুটি কাজ রয়েছে। তাই সেগুলোর সাথে মিলিয়েই হিরো ছবির জন্য তার শিডিউল ঠিক করবেন। আসছে ঈদুল ফিতরের আগেই এ ব্যাপারে চুক্তি হতে পারে। আর আগামী অক্টোবরেই ছবির শুটিং শুরু হতে-এমনটি জানান তিনি।
কেন এই চরিত্রের জন্য মিঠুনকেই বেছে নেওয়া হল? এর জবাবে পরিচালক কামরুজ্জামান রোমান বলেন, ‘চরিত্র যে অবয়ব তৈরি করে, তার জন্য রাজ্জাক সাহেবের মতো একজনকে দরকার ছিল। এই চরিত্রের অনেকগুলো মাত্রা রয়েছে। কারণ, এখানে মূল চরিত্র একজন বাবাকে নিয়ে। যে কারণে প্রথম থেকেই ভাবছিলাম মিঠুন চক্রবর্তীর কথা।’
পরিচালক কামরুজ্জামান আরও বলেন, ‘প্রথমে তাঁকে লাইনআপ দেয়া হয়েছিল। পুরো গল্প শোনানোর পর বললেন “ব্রিলিয়ান্ট, গল্পটি দারুণ! তিনি এই সিনেমা করবেন।”
১৯৭৬ সালে রুপালি পর্দায় আবির্ভাব মিঠুন চক্রবর্তীর। মৃগয়া চলচ্চিত্রে অভিষেক। আর প্রথম ছবিতেই 'সেরা অভিনেতা' হিসেবে ভারতের 'জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার' লাভ করেন। রসায়নে স্নাতক মিঠুনকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। তিন শতাধিক হিন্দি চলচ্চিত্রের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলা, পাঞ্জাবী, তেলুগু, ওড়িয়া, ভোজপুরী চলচ্চিত্রেও অংশ নিয়েছেন।