এশিয়া কাপ নিয়ে সাকিবের আশা

স্পোর্টস ডেস্ক

আগস্ট ২৬, ২০২৩, ১১:৩০ পিএম

এশিয়া কাপ নিয়ে সাকিবের আশা

রবিবার এশিয়া কাপ খেলতে শ্রীলংকা যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ৩০ আগস্ট শ্রীলংকায় এশিয়া কাপ শুরু হবে। ৩১ আগস্ট বাংলাদেশের প্রথম খেলা শ্রীলংকার বিপক্ষে। এর আগে শনিবার সাকিব আল হাসান ও কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন। সাকিবের পুরো সংবাদ সম্মেলন দ্য রিপোর্টের পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো-

যখন এশিয়া কাপে পাল্লেকেলেতে আমাদের প্রথম খেলা শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। ওখানে সাধারণত আগের রেকর্ড ব্যাটিং পিচ হয়ে থাকে। ব্যাটাররা রান করার সুবিধা পায়, বোলারদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং। সেক্ষেত্রে ব্যাটারদের জন্যও চ্যালেঞ্জিং বেশি ও তাড়াতাড়ি রান করা। সো আমাদের সবদিকে প্রিপারেশনটা থাকতে হবে। এলপিএলে মনে হয় আমরা মেজর পিচগুলোতে খেলি নি যেখানে এশিয়া কাপ হবে। পিচগুলো একটু ডিফারেন্ট ছিল। সো এখানকার সঙ্গে ওটা কম্পেয়ার করাটা ডিফিকাল্ট হবে। কিন্তু যেইটা ইম্পরট্যান্ট যে যেই কন্ডিশন আমি জানি এবং দেখে আসলাম, খুব বেশি দিনের ডিফারেন্স না। সো খুব বেশি একটা চেঞ্জ হওয়ার সম্ভাবনা নাই। ওইটা তো অবশ্যই আমাদের আলাপ হবে। যেহেতু আমরা তিন চার দিন আগে যাচ্ছি আমাদের খুব একটা ডিফিকাল্ট হবে না মনে হয় অ্যাডজাস্ট করতে। খুব বেশি একটা দূরত্ব আমাদের এখান থেকে। 

‘কোচ যেটা বললো খুব ভালো প্রস্তুতি হয়েছে। আমিও যতটুকু জেনেছি খুব ভালো প্রস্তুত। দুর্ভাগ্য যে এবাদত আমাদের দলের অংশ হতে পারছে না। ও আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। সে জায়গা থেকে সেট ব্যাক। তারপরও বলবো যে ধরনের প্রস্তুতি ও স্কোয়াড আছে আমরা অনেকদূর যেতে পারবো। বাট প্রথম বিষয় হলো আমাদের প্রথম দুইটা ম্যাচ খেলতে হবে। কোয়ালিফাই করতে হবে। এবং আমরা একটা একটা ম্যাচ করে আগাতে চাই। এমন না যে একেবারে কোথায় যাবো সেটা চিন্তা করছি। প্রতিটা ম্যাচ আমরা চিন্তা করব ও আমরা ওইভাবে প্রিপারেশন নেওয়ার চিন্তা করব। ভালো রেজাল্ট করার চেষ্টা করব। যদি সুযোগ থাকে সব ম্যাচ জেতার চেষ্টা করব।

যেটা হলো- পাপন ভাইয়ের সঙ্গে কথা হলো, ডিসকাস হলো। তারপর তো পাপন ভাই অ্যানাউন্স করলো। টিমের সঙ্গে মিটিংয়ে যা হইছে, ওইদিন মূলত কোচিং স্টাফদেরই কথা হইছে। তারাই কথা বলেছে।আমার খুব বেশি একটা কথা বলতে হয় না। এমন না যে খুব বেশি প্লেয়ার নতুন আসছে যাদেরকে আমি চিনি না। বেশিরভাগকে আমি অনেক দিন ধরে চিনি। বেশিরভাগই আমার আন্ডারে খেলেছে। বা আমি তাদের আন্ডারে খেলেছি। সো খুব বেশি একটা অ্যাডজাস্টমেন্টের দরকার আছে বলে মনে হয় না। আর যে দুই একজন নতুন প্লেয়ার এসেছে আমার ধারণা তারাও আমার সম্পর্কে ভালো আইডিয়া আছে। আমারও ও কোচিং স্টাফেরও ভালো আইডিয়া আছে। সো এখানে আসলে অ্যাডজাস্টমেন্টের খুব একটা দিক আছে বলে মনে হয় না। সবাই  জানে কার কার দায়িত্ব কী। যেহেতু আমাদের ক্রিকেটিং একটা কালচার আছে বা তৈরি করার চেষ্টা করছি, সো ওই জায়গা থেকে সবাই জানে যে যার যার জায়গা থেকে কাজটা বা কী করতে হবে ড্রেসিংরুমে।

আসলে যদিও সেটা অল্প বয়সে ছিল সেটা আমার জন্য এক্সপেরিয়েন্স ছিল। এখন যেহেতু এখন অনেক বড় এক্সপেরিয়েন্স আছে আমার কাছে মনে হয় ওই টিম থেকে এই টিম অনেক বেটার। সো সে ক্ষেত্রে আমাদের ভালো করার সম্ভাবনাটাও অনেক বেশি। এবং এক্সপেক্ট করব যে, আমি যেন ওই রকমই কিছু একটা করতে পারি। মাত্রই যেটা বললাম যে, ম্যাচ বাই ম্যাচ আমাদের টার্গেট থাকবে। এশিয়া কাপ হোক বা ওয়ার্ল্ড কাপ হোক। এই রকম টুর্নামেন্ট জিততে গেলে আসলে আপনাকে প্রতিটা ম্যাচ নিয়েই চিন্তা করতে হয়। ইন রেজাল্ট যদি চিন্তা করেন, তাহলে আপনার জন্য সিচুয়েশন ডিফিকাল্ট হয়ে যায়। সো আমরা চেষ্টা করব, প্রতিটা ম্যাচ টার্গেট করতে। ওয়ান বাই ওয়ান। ওইখানে যদি ভালো করতে পারি, মোমেন্টাম দিবে। ফার্স্ট কিছু ম্যাচ ।সেখানে যদি আমরা কন্টিনিউ করতে পারি ভালো একটা টুর্নামেন্ট হতেই পারে।

তামিম---

যে কোনো এক্সপেরিয়েন্স ক্রিকেটারই আসলে দলের জন্য জরুরি। দলকে কতটুকু কন্ট্রিবিউট করতে পারে সেটার উপর নির্ভর করে সবকিছু। বাট অবশ্যই এক্সপেরিয়েন্সের তো দাম আছে অবশ্যই। এক্সপেরিয়েন্স ক্রিকেটার দলে থাকলে কন্ডিশন সম্পর্কে বা বড় বড় টুর্নামেন্টগুলো খেলার যখন অভিজ্ঞতা থাকে। সেগুলো যখন শেয়ার করে সেটা সবার জন্য ইজি হয়ে যায়। স্পেশালি যারা নতুন দলে।

তানজিদ তামিম---

আমি অনেক আশাবাদী। শুধু আমি না পুরো টিমই অনেক আশাবাদী যে ও অনেক ভালো করবে। এর মানে এই না যে, এই দুই ম্যাচ বা চার ম্যাচ ও যদি ভালো না খেলে তাহলে ও ভালো হতে পারবে না। আবার এমন না যে এই চার ম্যাচ ভালো করলেই ও ভালো প্লেয়ার হয়ে যাবে। অনেক সামনে সময় আছে। আমি যেটা এক্সপেক্ট করব ওর থেকে যে ও যেটা করে আসছে লাস্ট কিছুদিন পারফরম্যান্স যে জায়গায় খেলেছে এমন পারফরম্যান্সটাই করে এবং এনজয় করে খেলাটা। ড্রেসিংরুমের পরিবেশটা এনজয় করে। আমাদের সবার দায়িত্ব ওকে যতটুকু সম্ভব কমফোর্টঅ্যাবল ফিল করানো। ও যদি সেটা ফিল করতে পারে, তাহলে আমার কাছে মনে হয় ও ভালো কিছু করতে পারে বাংলাদেশের জন্য।

লক্ষ্য----

এখন পুরোটাই এশিয়া কাপ কেন্দ্রিক আমাদের প্ল্যান প্রিপারেশন সবকিছুই। এটা যখন শেষ হবে ওয়ার্ল্ড কাপের সময় আসবে তখন আমরা এটা নিয়ে চিন্তা করব।  অ্যাট দিজ মোমেন্ট শুধু এশিয়া কাপ। আরও শর্ট করে যদি বলতে চাই, এখন শুধু আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা আমাদের মাথায় আছে।

অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী---

দেখুন ওরা যেহেতু একটা ওয়ার্ল্ড কাপ জিতেছে, ওদের মধ্যে একটা উইনিং মেন্টালিটি আছে। আমার কাছে মনে হয় যে, আমাদের দলকে আরও ভালো কিছু করার জন্য অনুপ্রাণিত করবে। ওদের ভেতরে সবার মধ্যে একটা মেন্টালিটি আছে, ওরা জিততে চায়। একটা টিমের জন্য এটা ইম্পর্ট্যান্ট। আশা করি, মেন্টালিটিটা নিয়ে ওরা ড্রেসিং রুমে আসবে। ড্রেসিংরুমের পরিবেশটা ওইভাবেই গড়ে তুলবে।

এশিয়ান ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলা----

দেখুন কোচ যেটা বলছে, সেটার সঙ্গে ইকো করতে চাই। রাইভারি এই শব্দটা আমার খুব একটা ভালো লাগে না। হ্যাঁ, লাস্ট কিছু ম্যাচ আমরা খুব কম্পিটিটিভ খেলেছি। দুইটা দলের সঙ্গেই। ওরাও যখন খেলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে জেতার জন্য। আমরা যখন খেলি, তখন সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। এটা আসলে ক্রাউডের জন্য ভালো। ক্রিকেটের জন্য ভালো। এবং আমরা চাইও এই রকম হোক। বাট অবশ্যই চাবো দিনশেষে আমরা যেন জিততে পারি। যেহেতু এখন আমরা সবাই সবাইকে চিনি, আল্টিমেটলি আমাদের ওই রকম রাইভালিরি প্লেয়ারদের মধ্যে নাই। বাট দেশের জন্য ম্যাচ জেতা সব সময় জরুরি। এবং আমরা বাংলাদেশ টিম সেটাই করার চেষ্টা করব।

তিন নম্বর---

দেখুন, এটা অনেক ইম্পর্ট্যান্ট যে আমরা যখন বড় টুর্নামেন্টগুলোতে যাই, অনেক বেশি ফ্লেক্সিবল থাকি। সেটা খুবই জরুরি। চার বছর আগে কি করেছি, তার মানে এই না যে চার বছর পরেও সেটা করতে পারব। এই গুলো আসলে খুবই কঠিন জিনিস। যখন দলের প্রয়োজনে যে জায়গাটায় খেলা প্রয়োজন, যাকে যেখানে কন্ট্রিবিউট করা প্রয়োজন, সেটা যদি করতে পারে দলের লাভ হবে বা হেল্প হবে। আমি কত রান করেছি ১৯-য়ে সেটা আসলে জরুরি না এখানে। এটা কিছুই ম্যাটার করে না।

যে কোনো জায়গায় যদি আমি দলের জন্য কন্ট্রিবিউট করতে পারি, আমি এনজয় করি।

সাকিব-তামিম----

এটা নিয়ে আসলে কোনোভাবেই দেখি না। আমি দুইটা প্লেয়ারকে দেখি যারা বাংলাদেশ টিমে এসেছে বাংলাদেশ টিমের জন্য ভালো করতে মুখিয়ে আছে। আমি আশা করি যেন ওদের ক্যারিয়ার অনেক বড় হয় এবং বাংলাদেশকে অনেকদিন সার্ভিস দিতে পারে।

বিশ্বকাপের জন্য এশিয়া কাপ ধাপ কি না---

এটা দিয়ে আসলে ওটা বোঝার কোনো কারণ আছে বলে মনে হয় না। দুইটা পুরো ভিন্ন দুইটা টুর্নামেন্ট। হ্যাঁ, যদি এখানে আমরা ভালো করতে পারি, তাহলে আমাদের সেই আত্মবিশ্বাস দিবে যে এশিয়ার ভেতরে ভালো একটা দল হিসেবে গড়ে উঠতে পারি, দেন ওয়ার্ল্ড কাপেও আমাদের ভালো করার একটা সম্ভাবনা থাকবে। সেই দিক থেকে এটা ইম্পর্ট্যান্ট। এর মানে এই না যে, এখানে খারাপ করলে সব আশা নিরাশ হয়ে যাবে। এটাতে ভালো করলেও যে সব আশা আরও বেড়ে যাবে সেটাও না।

Link copied!