রোমাঞ্চ প্রিয় তানজিদ তামিমের জাতীয় দলে সুযোগ

মুবিন আহমেদ

আগস্ট ১৪, ২০২৩, ০১:১৬ পিএম

রোমাঞ্চ প্রিয় তানজিদ তামিমের জাতীয় দলে সুযোগ

ছবি: গেটি ইমেজেস

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার কর্পুর (ফাজিলপুর) গ্রামে বেড়ে ওঠা তানজিদের। সরকারি কর্মকর্তা বাবা তোজাম্মেল হোসেন পেশায় স্বাস্থ্য পরিদর্শক।  চেয়েছিলেন তানজিদ হাসান তামিমও এগুতে থাকুক চেনা পথ ধরে। পড়াশোনা শেষ করে বেছে নিক ঝুঁকিহীন জীবন। কিন্তু তানজিদের মাথায় ছিল ক্রিকেটের পোকা।

বগুড়া জিলা স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির পরই তানজিদ ক্রিকেটের প্রতি ঝোঁকে ক্রিকেটের প্রতি ছেলের আগ্রহ দেখে মা রেহেনা বেগম নেন অন্য রকম কৌশল। স্কুলের পরীক্ষায় ভালো করলে ছেলেকে স্টেডিয়ামে নিয়ে ক্রিকেট খেলা দেখানোর আশ্বাস দেন তিনি। খেলা দেখার লোভে তামিম পরীক্ষায় ভালোও  করতে লাগলেন।

তামিমের মা ক্রিকেট অনুশীলন দেখাতে ছেলেকে নিয়ে যেতেন বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে। স্থানীয় কোচ মোসলেম উদ্দিন তামিমের মাকে স্বপ্ন দেখালেন, তাঁর ছেলে একদিন বড় ক্রিকেটার হবেন। তবে ছেলের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে বাদ সাধেন বাবা। রাগ করে তিনবার  ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তবে বাবা রাগ করলেও মা সব সময় ছেলের পাশে ছিলেন। 

মায়ের ইচ্ছায় পড়াশোনা ও ক্রিকেট একসঙ্গে চালিয়ে গেলেন তামিম। ২০১৫ সালে বগুড়া জিলা স্কুল থেকে এসএসসিতে এবং ২০১৭ সালে সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পান তামিম। পরিবারের সঙ্গে তাই লড়াই করে নিজেকে গড়ে তুলেছেন তিনি। জাতীয় দল পর্যন্ত উঠে আসতে এই তরুণ চলার পথে সহায়ক হিসেবে পেয়েছিলেন সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজনকেও।

বয়সভিত্তিক দলে তানজিদ আসেন রাজশাহীর বাংলা ট্র্যাক একাডেমির হাত ধরে। যে একাডেমি পরিচালনায় আছেন বিসিবি পরিচালক ও সাবেক ক্রিকেটার খালেদ মাহমুদ সুজন। ২০১৭-১৮ সালে উত্তরা স্পোর্টিংয়ের হয়ে ঢাকার প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ শুরু তানজিদের। উত্তরার হয়ে পরের বছর ৩৭১ রান করে আরেকটু আলোয় আসেন।

পরের বছর একই ক্লাবের হয়ে ১৩ ম্যাচে ৩৭১ রান করেন। তানজিদের বাংলাদেশে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে জায়গা হয়ে যায় এই পারফরম্যান্সের সৌজন্যে। দুই বছর পর তানজিদদের সেই দলটাই জিতেছে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। যুব বিশ্বকাপের পর ঠিক নিজেকে মেলে ধরতে পারছিলেন না। এজন্য কাঁধের চোটকেও দায়ি করেন তিনি।

ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে এবার প্রিমিয়ার লিগে তানজিদ ১১ ম্যাচ খেলেন। ২টি সেঞ্চুরি, ১টি ফিফটিসহ রান করেছেন ৪৭৪। স্ট্রাইক রেট ৯৩.৩০। কদিন আগে হয়ে যাওয়া ইমার্জিং এশিয়া কাপেও ছিলেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সেরা ব্যাটার। শ্রীলঙ্কায় হয়ে যাওয়া সে টুর্নামেন্টে ৪ ম্যাচে ১৭৯ রান করেছেন তানজিদ, তাতে ফিফটি ৩টি, স্ট্রাইক রেট ১১৬.৯৯। প্রতিপক্ষের সেরা বোলারকে মেরে খেলার কাজটা তামিম করে এসেছেন ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই । তাঁর এই পারফর্মেন্সই আবার কাড়েন নির্বাচকদের নজর। ইমার্জিং এশিয়া কাপে আগ্রাসী তিন ফিফটি তাকে করে দিল জাতীয় দলে আসার পথ।

Link copied!