ডিসেম্বর ১৫, ২০২২, ০৩:১২ এএম
মরক্কোকে বিদায় করে ফাইনালে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হয়ে গেল ফ্রান্স। ১৮ ডিসেম্বর বর্তমান ও সাবেক দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন মুখোমুখি হবে নতুন শিরোপা জয়ের জন্য। কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে বুধবার দিবাগত রাতে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দুর্দান্ত লড়াই করেও হেরে গেছে মরক্কো। ফ্রান্স গোল পোস্ট লক্ষ্য করে (অনটার্গেট) তিনটি আক্রমন করে দুটি গোল আদায় করে নেয়। বিপরীতে সমসংখ্যক অনটার্গেট শট নিয়েও গোল আদায় করে নিতে পারেনি মরক্কো।
ফ্রান্সের এই জয়ে বিরল আরেকটি রেকর্ডও হয়ে গেল, সেটি হল পরপর দুটি বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলা। এর আগে শুধু ব্রাজিলই এই রেকর্ডের অধিকারী ছিল। ব্রাজিল ১৯৯৮ এবং ২০০২ সালে পরপর দুটি বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলেছিল।
খেলার পুরোটা সময় দলকে উৎসাহ জুগিয়ে গেছে মরক্কোর সমর্থকরা। ছবি: ফিফা
ফ্রান্স-মরক্কোর এই ম্যাচের প্রথমার্ধের ৫ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। ডি-বক্সের ভেতরে দেম্বেলে প্রথমে গ্রিজম্যানকে দারুণ একটি পাস দেন। সেই পাসটি জিরুদের দিকে বাড়িয়ে দিলেও তা ব্লক করে দেন মরক্কোর ডিফেন্ডার। সেই বল পেয়ে যান ফরাসি ডিফেন্ডার থিও হার্নান্দেজ, যা হাফ ভলিতে গোল বানিয়ে ফরাসিদের এগিয়ে দেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের প্রায় পুরোটা সময় চেষ্টা করেও যা করতে পারেনি মরক্কো, বদলি হিসেবে মাঠে নামার ৪৪ সেকেন্ডের মধ্যে সেই তা করে ফেললেন ফ্রান্সের রান্দাল কোলো মুয়ানি। উসমান দেম্বেলের বদলি হিসেবে মাঠে নেমেই গোল পেয়ে গেলেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। কিলিয়ান এমবাপ্পের শট মরক্কোর এক খেলোয়াড়ের শরীরে বাঁধা পেলেও চলে যায় ডান পাশে ফাঁকায় দাঁড়ানো মুয়ানির কাছে। ঠাণ্ডা মাথায় ফ্রান্সের জার্সিতে প্রথম গোলটি করতে ভুল করেননি মাত্রই চতুর্থ ম্যাচ খেলতে নামা মুয়ানি। আসলে ওই গোলেই নিশ্চিত হয়ে যায় ফরাসিদের টানা দ্বিতীয়বারের ফাইনাল।
বিরতির পরও বারবার চ্যাম্পিয়নদের অন্তরাত্মা কাঁপিয়ে দিয়েছিল মরক্কো। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১৫ মিনিট বল তো ছিল ফ্রান্সের সীমানাতেই। এক আক্রমণেই একাধিকবার গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি মরোক্কানরা। ৫৪তম মিনিটের সেই আক্রমণে একবার রাফায়েল ভারান ও আরেকবার ইব্রাহিমা কোনাতে রক্ষা করেন ফ্রান্সকে। দু মিনিট পর আবার গোলের সুযোগ মরক্কোর, এবার আক্রমণ ছেড়ে রক্ষণে দলকে বাঁচান গ্রিজমান। ৭৫ মিনিটেও দারুণ এক সুযোগ নষ্ট করে মরক্কো। এবারও সময়মতো শট নিতে পারেনি দলটি।
বিপুল উৎসাহ নিয়ে গ্যালারিতে ছিল ফরাসি সমর্থকরা। ছবি: ফিফা
এ সব সুযোগ হারানোর আক্ষেপ নিয়েই শেষ পর্যন্ত ফাইনাল খেলার স্বপ্ন বিসর্জন দিতে হয়েছে অ্যাটলাসের সিংহদের। ভাগ্য পক্ষে না থাকলে অনেক সময় দারুণ খেলেও জেতা যায় না। মরক্কোর খেলা দেখে তাই বারবার ভাষ্যকারদের মুখ থেকে শোনা গেছে সেই আফসোসের কথা। হেরে বিদায় নিলেও একবুক ভালবাসা নিয়ে সেমিফাইনাল থেকে মরক্কো ফিরে যাচ্ছে নিজ দেশে। তবে স্মৃতি হিসেবে তাঁদের ঝুলিতে জমা থাকছে দারুণ খেলার উজ্জীবনী শক্তি। এই শক্তি তাঁদেরকে সামনের দিনগুলোতে পথ দেখাবে নিশ্চয়ই।
এদিকে রবিবার ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ফাইনালে কিলিয়ান এমবাপ্পের ফ্রান্স মাঠে নামবে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। জমাট একটি ফাইনাল লড়াই দেখার জন্য এখন মুখিয়ে আছে ফুটবলপ্রেমী বিশ্ব। স্বপ্নের বিশ্বকাপটি এবার বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের হাতে উঠবে, নাকি মেসির আর্জেন্টিনার হাতে? ট্রিলিয়ন ডলারের এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে রবিবার দিবাগত রাতেই।