অর্থ উপার্জন করতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয় অনেককেই। কেউ আবার শুধু ঘুমিয়ে টাকা উপার্জন করেন। কেউ কেউ অনেক পারিশ্রমিকের বিনিময়ে টাকা উপার্জন করে । কিন্তু কিছু না করেই প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করেন টোকিয়োর বাসিন্দা শোজি মোরিমাতো।
‘ডু নাথিং রেন্ট আ ম্যান’-এর ভাবনাটি ৩৯ বছর বয়সি শোজির মস্তিস্কপ্রসূত । পড়াশোনা শেষ করার পর অনেক চেষ্টা করেও চাকরি পাননি। বেকারত্ব জীবনকে কঠিন করে তুলছিল। সেই সময়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, নিজেই কিছু একটা করবেন। তবে ব্যবসা নয়, অন্য কিছু।
‘ডু নাথিং রেন্ট আ ম্যান’ নামে একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট খোলেন। তার পর থেকেই বিভিন্ন স্তরের মানুষ তাঁর সাথে যোগাযোগ করতে থাকেন। কিন্তু কেন? কী পরিষেবা দেন শোজি? এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা সারা দিন বাড়িতে একাই থাকেন। বাড়ির অন্য সদস্যরা হয়তো ব্যস্ত থাকার কারণে সে ভাবে সময় দিতে পারেন না। এমন মানুষদের একাকীত্বের সঙ্গী হন শোজি।
অনেকেরই প্রশ্ন থাকতে পারে কী তাঁর কাজ? মূলত তার কাজ হচ্ছে যাঁদের কথা বলার লোকের অভাব, তাঁদের কথা শোনা। খাওয়াদাওয়ার সময়ে একটু পাশে বসে থাকা। তবে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মুখ খোলেন না তিনি। শোজির দায়িত্ব এইটুকুই।
শোজির এক দিনের পারিশ্রমিক হল বাংলাদেশি টাকায় ৭৫০০টাকার মতো । প্রায় সারা মাসই বুকিং থাকে তাঁর। শোজি কিন্তু অত্যন্ত পেশাদার। কাজের সময়টুকু ছাড়া কারও সাথে যোগাযোগ রাখেন না। কোনও গ্রাহকের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক যাতে গড়ে না ওঠে, সে বিষয়েও অত্যন্ত সতর্ক থাকেন তিনি। কাজের সময়ে মুখ বন্ধ রাখলেও, তাঁর এই ভিন্ন ধারার পেশা সম্পর্কে মুখ খুলেছেন শোজি।
তিনি বলেন, ‘‘আমি আমার কাজ সম্পর্ক যথেষ্ট সচেতন। নিজের উপস্থিতির বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করি। আমার সঙ্গ পেয়ে অল্প সময়ের জন্য হলেও কেউ যদি একাকীত্ব থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন, সেটাই কাম্য।’’ ইতিমধ্যে শোজিকে অনুসরণ করে প্রায় ৩০০০ জন এই পেশায় এসেছেন।