জাবির 'বি' ইউনিটের ফলাফলে শিফট বৈষম্যের অভিযোগ

জাবি প্রতিনিধি

আগস্ট ২, ২০২২, ০৭:১৩ পিএম

জাবির 'বি' ইউনিটের ফলাফলে শিফট বৈষম্যের অভিযোগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ও আইন অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের প্রকাশিত  ফলাফলে চরম শিফট বৈষম্য দেখ গেছে। 

‘বি’ ইউনিটভুক্ত সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ও আইন অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় মোট ৩৮৬টি আসনের বিপরীতে ৪৮ হাজার ৩৪৮ জন ভর্তিচ্ছু আবেদন করেছে। আসন প্রতি লড়েছেন ১২৫ জন। পরীক্ষায় উপস্থিত ছিল প্রায় ৯০ শতাংশ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। এই ইউনিটে ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক ১৯৩ টি করে আসন রয়েছে। মোট আসন সংখ্যার ১০গুণ পরীক্ষার্থীর মেধাতালিকায় প্রকাশ করা হয়েছে।

ছেলেদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন মো. সাকিব হোসেন ও মেয়েদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন সুমাইয়া ওয়াদুদ সুখি। গতকাল ১ আগস্ট পাঁচ শিফটের প্রতি শিফটে ৯৬৭০ জন করে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিগত বছরগুলোর মতো এবারও মেধা তালিকায় স্থান করে নেয়ার ক্ষেত্রে শিফট বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়েছে৷ প্রথম শিফট থেকে মাত্র ৩৪ জন জন চান্স পেলেও, পঞ্চম বা শেষ শিফট থেকে 'বি' ইউনিটে চান্স পেয়েছে ১৭৫ জন। এ শিফট থেকে ৯৮ জন ছেলে ও ৭৭ জন মেয়ে মেধাতালিকায় চান্স পেয়েছেন।

এছাড়া মেধাতালিকায় ছেলেদের সর্বনিম্ন ১৯ জন ও মেয়েদের ১৫ জন প্রথম শিফট থেকে স্থান পেয়েছেন। এছাড়া দ্বিতীয় শিফট থেকে ৩৩ জন ছেলে ও ২৬ জন মেয়ে, তৃতীয় শিফট থেকে ২১ জন ছেলে ও ৩০ জন মেয়ে এবং চতুর্থ শিফট থেকে ৪৩ জন ছেলে ও ২৪ জন মেয়ে মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছেন।

ভর্তিপরীক্ষা সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তিরা সবসময়ই বলে থাকেন, শিফট ভিন্ন হলেও, প্রশ্নপত্রের মান প্রায় সবসময়ই একই রকম হয়ে থাকে। সে হিসেবে পাঁচটি শিফটের প্রতি শিফট থেকে শিক্ষার্থী চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা  প্রায় ২০% এর কাছাকাছি। কিন্তু এবারের ভর্তি পরীক্ষায় ৫ম শিফট থেকে চান্স পেয়েছে ১৭৫ জন। যা উক্ত ইউনিটে মোট চান্সপ্রাপ্তির ৪৫.৩৪%। অন্যদিকে প্রথম শিফটে চান্স পেয়েছে ৩৪ জন, যা মোট চান্সপ্রাপ্তির মাত্র ৮.৮১%। এছাড়া মেধাতালিকা চান্সপ্রাপ্ত  প্রথম দশজনের মধ্যে পাঁচজনই শেষ শিফট থেকে চান্সপ্রাপ্ত। 

ফলাফলের ব্যাপারে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন আকবর হোসেনের সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি। এদিকে শিফট বৈষম্যের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশের পাদদেশে প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে কয়েকজন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। অবস্থানরত শোভন  নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা একক প্রশ্নপত্রে ও একই শিফটে পরীক্ষা দিতে চাই। সকল শিফটের প্রশ্ন ভিন্ন হওয়ার কারণে পরীক্ষাটা অনেকটা লটারির মতো। প্রশ্ন কখনও সহজ আবার কখনও সহজ হয়। প্রশ্নের এই বৈষম্য দূর করার প্রতিবাদেই এই অবস্থান কর্মসূচি।’

শিফট বৈষম্যের ব্যাপারে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।

Link copied!