বিশ্বকাপের মতো মর্যাদাপূর্ণ খেলার আসরে জেতা একটি বড় ঘটনা। আর সেই জয় যদি হয় শক্তিশালী কোনো দেশের সাথে, সেটি তো আরও বড় ঘটনা। আর্জেন্টিনার সাথে ২-১ গোলে জিতে সৌদি আরব তাই সরকারি ছুটিই ঘোষণা করে দিল। জয়ের পরই সৌদির রাস্তায় দেশটির নাগরিকরা পতাকা মিছিল বের করে। গোটা দেশে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।
রাস্তায় সৌদি আরবের পতাকা নিয়ে অনেকে বেরিয়ে আসেন। কারোবা গলায় জড়ানো সৌদি পতাকার আদলে তৈরি স্কার্ফ। ছাদখোলা গাড়িতে যুবকেরা উল্লাস করছেন রিয়াদের রাস্তায়। কেউ আবার বিশ্বকাপের রেপ্লিকা নিয়ে ফুটপাতের ওপর আনন্দ করছেন। দৃশ্যটা শুধু রিয়াদে নয়, সৌদি আরবজুড়েই যেন ঈদের আনন্দ লেগেছে। কে জানত, এভাবে আর্জেন্টিনাকে স্তব্ধ করে স্বপ্নের মতো বিশ্বকাপ শুরু করবে সৌদি আরব?
আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসেরই বড় অঘটন ঘটিয়েছে সৌদি আরব। কাতারের আইকনিক লুসাইল স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনাকে ২-১ গোলে হারিয়েছে সৌদি। এমন বিশাল জয় উদ্যাপনের জন্য আগামীকাল দেশটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় দলের ফুটবলারদের জয় উদ্যাপনের জন্য ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ছুটির এ প্রস্তাব দেন। এরপর ছুটির বিষয়টি অনুমোদন দেন বাদশাহ সালমান। সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, এ দিন সব সরকারি-বেসরকারি খাতের কর্মচারী এবং সব পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ছুটি থাকবে।
সৌদি আরবের বিপক্ষে প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনা একটি গোল করে। কিন্তু তাদের তিনটি গোল বাতিল হয় অফসাইডের ফাঁদে পড়ে। ৪৮ মিনিটে সৌদি আরবকে সমতায় ফেরান সালেহ আল–শেহরি। এরপর পুরো ফুটবল–বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে ৫৩ মিনিটে সৌদি আরবের জয়সূচক গোলটি করেন সালেম আল দাওসারি। ফিফা তাঁদের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করে লিখেছে: ‘এটা ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসের অন্যতম বড় অঘটন।’ সৌদি আরবের এ জয়ে আর্জেন্টিনার টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ডও ভেঙে গেছে আজ।
বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে এমন অসাধারণ জয় আসবে— খোদ দেশের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানও আশা করেননি। গত মাসে তিনি ফুটবলারদের অবশ্য বলে রেখেছিলেন, ‘কেউ এই টুর্নামেন্ট থেকে তোমাদের কাছ থেকে কোনো পয়েন্ট আশা করে না। আমি জানি, এই বিশ্বকাপে আমাদের গ্রুপটা খুব কঠিন। কেউই জয় বা ড্রয়ের কোনো প্রত্যাশা করি না। তাই আমি বলতে চাই, তোমরা চাপমুক্ত থাকো। স্বাচ্ছন্দ্যে নিজেদের খেলাটা খেলো এবং টুর্নামেন্টটা উপভোগ করো।’
চাপমুক্ত থেকে নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলে সৌদি আরব শুধু বিশ্বকাপে নয়, পুরো ফুটবল–বিশ্বকেই চমকে দিয়েছে আজ! দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে অনন্য এক রেকর্ড গড়েছে তাঁরা।