সম্প্রতি বাংলাদেশকে নিয়ে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরায় ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ শিরোনামে যে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে সেটি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা ও সমালোচনা হয়েছে। আল-জাজিজার ওই প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেছে বিভিন্ন মহল। প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রী ও সেনা প্রধানের বিরুদ্ধে সম্মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে যড়যন্ত্র করা হয়েছে- দাবি করে সংশিষ্ট চারজনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলার আবেদনও করা হয়েছে।
এতোদিন প্রতিবেদটি নিয়ে নানান মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা হলেও এবার এ বিষয়ে সরাসরি নিজের মন্তব্য ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনে ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এটা নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। কিছু বলারও নেই। একটা চ্যানেল কী করেছে, কী দেখিয়েছে৷ কী বলতে চেয়েছে। এর সত্য-মিথ্যা দেশবাসী যাচাই করবেন। এসব ঘটনায় যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের ইন্ধন থাকতে পারে। কেননা তারা তো থেমে থাকবে না। তাছাড়া আওয়ামী লীগ বিরোধিতার বিষয়টি তো রয়েছেই।
শনিবার বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করায় সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হন।
সাংবাদিকের ওই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘একটা বিষয় মনে রাখবেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী, যাদের ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছিল। যে খুনীরা একটা দেশের শুধু রাষ্ট্রপতি না, একটা পরিবারের ছোট্ট শিশুকে পর্যন্ত হত্যা করেছে। সেই খুনিদের ইনডেমনিটি দিয়ে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে চাকরি দেয়া হয়েছে। বিদেশি দূতাবাসে দেয়া হয়েছে। তাদের নির্বাচন করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। জনগণের ভোট চুরি করে পার্লামেন্টেও বসানো হয়েছে, এভাবে তাদের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। যারা এটা করেছে তাদের সম্পর্কে আপনাদেরও ধারণা রয়েছে।’
মুজিববর্ষে সবার জন্য ঘর দেওয়ার কর্মসূচির কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে দেশের সকল গৃহহীনদের ঘর প্রদান কর্মসূচির আওতায় ৮ লাখ ৯২ হাজার গৃহহীনকে ঘর দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৭০ হাজার ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। আরও ৫০ হাজার গৃহ নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ১৯৯৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৩৪৬ পরিবারকে বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।’
দেশের করোনা মোকাবেলায় টিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমি নির্দেশ দিয়েছি, আরো তিন কোটি ডোজ কেনার জন্য। যাতে করে আমাদের যেটা আছে, সেটা প্রথম ডোজ দেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ শুরু করতে পারি। আর তার সঙ্গে সঙ্গেই যেন আবার টিকা আমাদের হাতে এসে যায়। একটা মানুষও যাতে এই টিকা থেকে বাদ না যায়, তার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।’
করোনাকালে অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে এখন পর্যন্ত আমরা ১ লাখ ২৪ হাজার কোটি টাকার ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি, যা মোট জিডিপির ৪.৪৪ শতাংশ।