অক্টোবর ৬, ২০২১, ১২:৩০ এএম
নবম গ্রেডের সকল সরকারী চাকরির জন্য প্রত্যেক আবেদনকারীকে আবেদন ফি হিসেবে জমা দিতে হয় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। চাকরির আবেদনে এই পরিমাণ অর্থ আবেদকারীদের জন্য বিরাট বোঝা। এছাড়াও অনেকেরই সরকারী চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাদের অনেকের জন্য আগামী শুক্রবার (৮ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ১৬টি পরীক্ষা ছিল সরকারি চাকরি লাভের শেষ সম্ভাবনা। ফলে একইদিনে এতগুলো পরীক্ষা দেওয়াটা পরীক্ষার্থীদের কাছে প্রহসন।
চাকরিপ্রার্থী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ফারজানা ইয়াসমিন দ্যা রিপোর্টের সঙ্গে ফোনালাপে শুক্রবারে (৮ অক্টোবর) ১৬ টি সরকারি চাকরির পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এর আগে ২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ শুরু হলে সরকারী অধিদপ্তর-দপ্তরসমূহ তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেয়। প্রায় দেড় বছর স্থগিত থাকার পর নিয়োগ পরীক্ষাগুলো নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে তারা।
হুট করে একইদিনে একাধিক পরীক্ষার সময়সূচী নির্ধারণ করায় পরীক্ষার্থীরা পড়েছেন বিপাকে। আগামী শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সবমিলিয়ে ১৬ টি সরকারী চাকরির পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। বেশ কিছু পরীক্ষার সূচী নির্ধারণ করা হয়েছে একই সময়ে।
এ প্রসঙ্গে সাজিদ রহমান নামে এক চাকরিপ্রার্থী দ্যা রিপোর্টকে বলেন, ‘সরকার তো আমাদের মাগনা পরীক্ষা দিতে দেয় না। টাকা দিয়েই আমাদের আবেদন করতে হয়। ফলে আমাদের প্রত্যেক চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার অধিকার আছে’।
সাজিদ আরো বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আমাদের বাধ্য করছে আমরা কোন পরীক্ষায় অংশ নিব আর কোনটাতে নিব না। হাজার হাজার প্রার্থী অনেক টাকা খরচ করে এই আবেদনগুলো করেছিল। এতগেুলো টাকা দিয়ে পরীক্ষা দিতে না পারাটা আমাদের জন্য হতাশাজনক। টাকা দিয়ে চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারাটা আমাদের দায় নয়’।
সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (বিপিএসসি) কাছে জানতে চাইলে সেখানকার একাধিক কর্মকর্তা দ্যা রিপোর্টকে জানান, একই দিনে একই সময়ে একাধিক পরীক্ষা নেওয়ার সঙ্গে তাদের কোন যোগসূত্র নেই।
তারা বলেন, ‘এটি সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তর-দপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার তারা কখন এবং কীভাবে পরীক্ষা নেবে। আমরা তাদের কোন নির্দেশনা দেইনি এবং এর সঙ্গে আমাদের কোন যোগসূত্র নেই’।
কর্মকর্তারা বলেন, ‘সাধারণত সরকারি অধিদপ্তর-দপ্তর এবং মন্ত্রণালয়গুলো নিজেদের তত্ত্বাবধানে এসব পরীক্ষা নিয়ে থাকে। এটা একান্তই তাদের এখতিয়ার যে, তারা কখন পরীক্ষা নেবে’।
এমন হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে অনেক চাকরিপ্রার্থী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। বয়সে শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেকেরই এই পরীক্ষাগুলো ছিল জীবনের শেষ পরীক্ষা। কিন্তু একইদিনে এতগুলো পরীক্ষা দেওয়ায় তারা তাদের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।