ওয়াশিংটন চায় শক্তিশালী অংশীদারিত্ব, ঢাকার আগ্রহ বিনিয়োগ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ৫, ২০২২, ০৭:৫৩ পিএম

ওয়াশিংটন চায় শক্তিশালী অংশীদারিত্ব, ঢাকার আগ্রহ বিনিয়োগ

বাংলাদেশ ও যুত্তরাষ্ট্রের অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করতে আগামী দিনগুলোতে ঢাকার সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন। তবে  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরও বিনিয়োগ পেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।

গতকাল সোমবার বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির দিনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয়  বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড, এ কে আব্দুল মোমেন।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটে স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টায় শুরু হওয়া বৈঠকে ঢাকা-ওয়াশিংটনের ৫০ বছরের সম্পর্কের পর্যালোচনা, র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, খুনি রাশেদকে ফেরত, রোহিঙ্গা ইস্যু, জলবায়ু সংকট মোকাবিলাসহ বিভিন্ন ইস্যু স্থান পায়।

বৈঠক শেষে মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের এক বিজ্ঞপ্তিতে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব আরও জোরদারে একসঙ্গে কাজ করতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র আনন্দিত। আমরা পরবর্তী ৫০ বছরের দিকে তাকিয়ে আছি। আমাদের অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করতে একসঙ্গে কাজ করতে চাই।”

গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ সত্যিই অনেক অর্জন করেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “  আমাদের চলার পথে যুক্তরাষ্ট্র বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে সঙ্গে ছিল। সবসময় মার্কিন সহযোগিতা আমাদের সঙ্গে ছিল। বাংলাদেশ এখন আর সেই তলাবিহীন ঝুড়ি নেই। সম্ভাবনাময় অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশে জ্বালানি খাতের বাইরেও মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানোর সময় এসেছ। আমরা ওয়াশিংটনের সঙ্গে আরও উন্নত ও দৃঢ় সম্পর্কের অপেক্ষায় রয়েছি।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। তিনি বলেন, “ যুক্তরাষ্ট্র অবকাঠামো খাতে তেমনভাবে বিনিয়োগ করেনি। আমি ওনাদের অনুরোধ করেছি এখানে যুক্ত হওয়ার জন্য। বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল ও আইটি খাতে তাদের বিনিয়োগের আহ্বান করেছি। ভ্যাকসিন সহায়তা করায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি। রোহিঙ্গা গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি।”

শ্রম অধিকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, তারা বাংলাদেশের শ্রম অধিকার আরও উন্নত করার সুপারিশ করেছেন। আমরা তাদের শ্রম অধিকার বিষয়ে বাংলাদেশে যেসব উন্নতি করেছে সেসব বিষয় সম্পর্কে জানিয়েছি। তাদের বলেছি, আমরা আইএলও এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে পরামর্শ করে শ্রম অধিকার খাতের উন্নয়ন করছি।”

খুনি রাশেদ চৌধুরীকে প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি আলোচনায় তোলা হয়েছে মোমেন বলেন, “বৈঠকে রাশেদ চৌধুরীর বিষয়টি তুলেছি। আমি বলেছি, একজন খুনিকে আশ্রয় দেওয়াকে আমেরিকান জনগণ পছন্দ করবে না। এটা নিয়ে আপনাদের চিন্তা করা উচিত। এ প্রক্রিয়াটি দ্রুত শেষ করার কথা বলেছি।”

ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, “আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, অবাধ, উন্মুক্ত, অন্তর্মুখী এবং নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক চাই। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই।”

বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিয়েছেন সেগুলো ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের আরেক বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরেন দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস।

সেখানে বলা হয়, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় চলমান সহযোগিতা, গণহত্যার শিকার রোহিঙ্গাদের চাহিদা মেটাতে এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে আঞ্চলিক নিরাপত্তার কথা তুলে ধরেন। সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন এবং ধর্মের স্বাধীনতা রক্ষায় গুরুত্ব দেন।

Link copied!