আগস্ট ১৮, ২০২২, ০৮:২৮ পিএম
দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবি করলেও বর্তমানে একজন চা শ্রমিক দৈনিক প্রায় ৪০০ টাকা সমপরিমাণ সুবিধা পেয়ে থাকেন বলে দাবি করেছে টি অ্যাসোসিয়েশন।
এছাড়া গত ২০১২ সাল থেকে ১০ বছরে চায়ের নিলাম মূল্যের প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে শুন্য দশমিক ১৬ হারে বৃদ্ধি পেলেও চা শ্রমিকদের মজুরি ৯৪.২০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চট্টগ্রাম, সিলেটসহ সারাদেশের চা-বাগানে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে চা শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলার মধ্যেই গত সঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে টি অ্যাসোসিয়েশন।
বিবৃতিতে বলা হয়, শ্রমিক কল্যানমূখী বাংলাদেশের চা শিল্প যখন বিশ্ববাজারে প্রভাব বিস্তার করছে তখন আন্দোলনের নামে ৩,৫০০ কোটি টাকার বাজারকে ঝুঁকিতে ফেলছে বলে আশংকা করছেন উদ্যোক্তারা।
চা বাগানে শ্রমের দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবি করা হলেও একজন শ্রমিক দৈনিক প্রায় ৪০০ টাকা সমপরিমান সুবিধা পেয়ে থাকেন বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশন।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রত্যক্ষ সুবিধার মধ্যে দৈনিক নগদ মজুরি ছাড়াও ওভারটাইম, বার্ষিক ছুটি ভাতা, উৎসব ছুটি ভাতা, অসুস্থজনিত ছুটি ভাতা, ভবিষ্যৎ তহবিল ভাতা, কাজে উপস্তিতি ভাতা, ভবিষ্যৎ তহবিলের উপর প্রশাসনিক ভাতার মাধ্যমে সর্বমোট গড়ে দৈনিক মজুরির প্রায় দ্বিগুন নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, শ্রমিকদের সামাজিক উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য দৈনিক ১৭৫ টাকার বিভিন্ন রকম সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে ১৬৮ টি বাণিজ্যিক চা উৎপাদনের বাগান কাজ করছে, জানিয়ে বিবৃতিতে অঅরও বলা হয়, যেখানে ১.৫ লাখেরও বেশি লোকের কর্মসংস্থান রয়েছে। উপরন্তু, বাংলাদেশ বিশ্বের ৩ শতাংশ চা উৎপাদন করে।২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশী চায়ের বাজারের মূল্য প্রায় ৩,৫০০ কোটি টাকা জিডিপিতে এই শিল্পের অবদান প্রায় ১ শতাংশ।
আন্দোলনের কারনে সিলেট ও চট্টগ্রামের ১৬৮ চা বাগানে থেকে দৈনিক ২০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যমানের চা পাতা নষ্ট হচ্ছে বলে বিৃতিতে দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভর্তুকির মাধ্যমে ২ টাকা কেজি দরে মাস প্রতি শ্রমিক কে প্রতি মাসে প্রতি ৪২.৪৬ কেজি চাল অথবা গম রেশন প্রদান করা হয়। তাছাড়া শ্রমিকদের খাদ্য নিরাপত্তা আরো সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে প্রায় ৯৪ হাজার ২০০ বিঘা জমি চাষাবাদের জন্য বন্টন করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, শ্রমিকদের স্বাস্থ সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ০২ টি বড় গ্রুপের ও ৮৪ টি বাগানের হাসপাতালে ৭২১ শয্যার ব্যবস্থা, ১৫৫ টি ডিসপেনসারসহ সর্বমোট ৮৯১ জন মেডিকেল স্টাফ নিয়োজিত আছেন। শ্রমিকদের সন্তানদের সুশিক্ষা নিশ্চিতকরণে প্রাথমিক, জুনিয়র ও উচ্চ বিদ্যালয় মাইল সর্বমোট ৭৬৮টি বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে ১ হাজার ২৩২ শিক্ষক দ্বারা বর্তমানে ৪৪,১৭১ জন শিক্ষার্থী বিনামূল্যে পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছে।
এছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকের ভাতা, বিভিন্ন রকম শ্রমিক কল্যাণ সূচি যেমন বিশুদ্ধ খাবার পানি, ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক, স্বাস্থসম্মত টয়লেট, পূজা, বিনোদন প্রভৃতি কর্মকাণ্ডে সামগ্রিক আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। চা শ্রমিকের অবসরের পর তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা চাকরিতে নিয়োগ পেয়ে থাকে, যা একজন চা শ্রমিকের চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকে বলে দাবি করা হয়েছে টি অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে।