আগস্ট ৬, ২০২২, ০২:০৯ পিএম
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই মূল্যবৃদ্ধি বাতিলের দাবি জানায় সংগঠনটি।
শনিবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠোনো এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার গত নভেম্বরে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম এক লাফে ১৫ টাকা বৃদ্ধি করেছিলেন। তখন দাম নির্ধারণ করা হয় ৮০ টাকা লিটার। ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর বাস ভাড়া বাড়ানো হয় প্রায় ২৭ শতাংশ, লঞ্চ ভাড়া বাড়ানো হয় ৩৫ শতাংশ যা তেলের দাম বাড়ানো হারের চেয়ে অনেক বেশি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, দ্রব্যমূল্য উধ্বগতিতে দিশেহারা দেশের সাধারণ মানুষের চরম এক দুঃসময়ে জ্বালানি তেলের দাম একলাফে প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছির বাড়ানো ফলে জনজীবনে চরম দূর্ভোগ নেমে আসবে।
পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ হওয়ায় পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য সাধারণ মানুষের সামর্থ্যরে বাইরে চলে যাবে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “ পরিবহন সেক্টরে অস্থিরতা দেখা দেবে। শিল্প উৎপাদন ব্যহত হবে, ফলে আমদানির উপর নির্ভরশীলতা বাড়বে। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেক ছোট ছোট শিল্প-কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে একদিকে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে জাতীয় অর্থনীতি উপর চাপ আরো বাড়বে।”
বিবৃতিত দাবি করা হয়, , বিশ্ববাজারে জ্বালানী তেলের দাম বাড়ালেও বর্তমানে তেলের বাজার নিম্নমুখী। এই সময়ে বাজার পর্যবেক্ষণ না করে, কেবল আইএমএফের প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়নে জ্বালানী তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও গণবিরোধী। অনতিবিলম্বে বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করে, পূর্বের মূল্য বহাল রাখার দাবি জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, গতকাল শুক্রবার হঠাৎ করেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা, অকটেনের দাম লিটারে ৪৬ টাকা আর পেট্রলের দাম লিটারে ৪৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এখন এক লিটার ডিজেল কিনতে ১১৪ টাকা লাগবে। এক লিটার অকটেনের জন্য গুনতে হবে ১৩৫ টাকা। আর প্রতি লিটার পেট্রলের দাম হবে ১৩০ টাকা।
শুক্রবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জ্বালানি তেলের নতুন এই দর জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, আজ (শুক্রবার) রাত ১২টার পর থেকে নতুন এই দর কার্যকর হবে।এর আগে গত বছরের নভেম্বরে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। সে সময় ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়। তাতে দাম হয়েছিল ৮০ টাকা লিটার। তার আগে এই দুই জ্বালানি তেলের দাম ছিল লিটারে ৬৫ টাকা।
দাম বাড়ার কারণ ব্যাখ্যায় জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বিগত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রিতে ৮ হাজার ১৪ কোটি টাকার বেশি লোকসান দিয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য পুনর্বিবেচনা করা হবে।