রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ‘ম্যাজিক মাশরুম’ নামের মাদক উদ্ধার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (৬ জুলাই) রাতে র্যাব-১০-এর একটি দল এ অভিযান চালেয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে এর সঙ্গে জড়িত অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- নাগিব হাসান অর্ণব (২৫), ও তাইফুর রশিদ জাহিদ (২৩)। এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় মাদক ‘ম্যাজিক মাশরুমে’র ৫টি বারে ১২০টি স্লাইস এবং দুই বোতল বিদেশি মদ।
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গণমাধ্যমকে জানান, এই মাদক যদি কেউ ৫ থেকে ১০ মিলিগ্রাম সেবন করে তাহলে হ্যালুসিনেশন শুরু হয় এবং এর প্রতিক্রিয়া ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকে। পর মানসিক রোগ- সাইকোসিস ছাড়াও অবিরাম হ্যালুসিনেশনের কারণ হতে পারে। এছাড়াও অনিদ্রা হয়, চোখ ফুলে যাওয়ার কারণও হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, নতুন মাদক ম্যাজিক মাশরুমে’ সেবন করার পর জীব-জন্তুর সঙ্গেও কথা বলা শুরু করে মাদকসেবীরা। কখনো কখনো অক্সিজেনের জন্য গাছ জড়িয়ে ধরার মতো কাণ্ডও করে। এই মাদক মূলত উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের তরুণেরা সেবন করে থাকে।
তিনি বলেন, ম্যাজিক মাশরুম একটি সাইকেলেডিক (হ্যালোসিনোজেন) ড্রাগ। এই ড্রাগটি বিভিন্ন খাবারে- কেক ও চকলেট মিক্স অবস্থায় সেবন করা হয়। এছাড়াও পাউডার ক্যাপসুল হিসেবেও পাওয়া যায়। এই ড্রাগ ব্যবহারে সেবনকারীর নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। এমনকি কেউ কেউ ছাদ থেকে ঝাঁপিয়েও পড়তে পারে।
ম্যাজিক মাশরুম সেবনে শারীরিক ক্ষতি ছাড়াও দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে মানসিক রোগ- সাইকোসিস ছাড়াও অবিরাম হ্যালুসিনেশনের কারণ হতে পারে। এই ধরনের অপ্রচলিত ড্রাগের চাহিদা তৈরি হয় মাদক সেবীদের নতুনত্বের প্রতি আগ্রহের মাধ্যমে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, তাইফুর রশিদ জাহিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ জন্মানো বিভিন্ন মাশরুমের মধ্যে সাইকেডেলিক বা ম্যাজিক মাশরুম আছে কি-না তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। এ বিষয়ে সে ব্যর্থ হওয়ার পর, ডার্ক সাইটে ম্যাজিক মাশরুমের খোঁজ করতে শুরু করে। ডার্ক সাইটে ম্যাজিক মাশরুমের খোঁজ পাওয়ার পর সে বিদেশে অবস্থানরত তার বন্ধু ও পরিচিতদের ম্যাজিক মাশরুম বাংলাদেশে নিয়ে আসার অনুরোধ জানায়।
তিনি আরও বলেন, কানাডায় অবস্থানরত তার বাল্যবন্ধু গ্রেপ্তার নাগিব হাসান অর্ণব অধিক মুনাফা লাভের আশায় তাইফুর রশিদ জাহিনের এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। তাইফুর ম্যাজিক মাশরুমের বারগুলো বাংলাদেশে বিক্রির ব্যবস্থা করে।
র্যাব জানায়, নাগিব হাসান অর্ণব বাংলাদেশে এসএসসি পর্যন্ত অধ্যয়ন করে। এ সময় তাইফুর রশিদ জাহিদ তার সহপাঠী ছিল। অর্ণব পরবর্তীতে ২০১৪ সালে কানাডায় চলে যায়। কানাডায় একটি ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়ন শেষে সেখানে চাকরি করছিল।