দেশের পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরায়েল’ বাদ দিলেও হয়নি কোনো মানোন্নয়ন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ২৬, ২০২১, ০৯:২৮ পিএম

দেশের পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরায়েল’ বাদ দিলেও হয়নি কোনো মানোন্নয়ন

বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ‘এক্সেপ্ট ইসরায়েল’ লেখা বাদ দিলেও কোন মানোন্নায়ন হয়নি পাসপোর্ট র‌্যাংকিংয়ের। অথচ বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছিল যে, দেশের পাসপোর্টের মানোন্নয়নের জন্যই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত বৈশ্বিক পাসপোর্ট সূচক ২০২১ অনুসারে ৪১টি গন্তব্যে ভিসামুক্ত সুবিধা নিয়ে ১০০তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। যা গত বছরে ১০১তম স্থানে ছিল বাংলাদেশ।

ইসরায়েলকে বাতিল রেখেও মালয়েশিয়া পাসপোর্ট র‌্যাংকিংয়ে ১২তম স্থানে রয়েছে। মোট ১৯৩টি দেশের ভিসা গন্তব্যের সুবিধা নিয়ে ১১২টি দেশের র‌্যাংকিং করা হয়। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের পরে আছে কেবল নেপাল,পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। 

Dhevarajan Devadas on Twitter:
মালয়েশিয়া এখনও ইসরায়েলকে তাদের পাসপোর্টে স্থান দেয়নি। ছবি: ইন্টারনেট

পাসপোর্টের মানোন্নয়নে ‘ইসরাইল ব্যতীত’ কতটা কার্যকর

বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ‘এক্সেপ্ট ইসরায়েল’ লেখা বাদ প্রসঙ্গে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের পাসপোর্টের মানোন্নয়নের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি তরফে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু ইসরায়েলকে দেশ হিসেবে বাংলাদেশ স্বীকার করে না এবং দেশটিতে কোনো বাংলাদেশি গেলে তাকে শাস্তি পেতে হবে বলেও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, পাসপোর্টের র‌্যাংকিং মূলত অন এরাইভেল ভিসার উপর নির্ভর করে। ‘ইসরাইল ব্যতীত’ লেখা পাসপোর্টে না থাকলেও সেখানে যাওয়ার বিধান নেই। তাই কোন অবস্থাতেই এটা পাসপোর্টের মানোন্নয়নে সহায়ক নয়।

তবে এরচেয়ে ই-পাসপোর্ট যথাযথ ব্যবহার করা গেলে পাসপোর্টের মানোন্নয়ন হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। মূল্যায়ণ বাড়ার বিষয়ে সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির বলেন, পাসপোর্ট র‌্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে মূলত ই-পাসপোর্ট মূল ভূমিকা পালন করবে। এরমধ্যে একটি হচ্ছে, এই পাসপোর্ট ব্যবহারের ফলে দেশের নাগরিকরা কতটা সুবিধা পাচ্ছেন। সারা বিশ্বেই ইলেক্ট্রনিক ভেরিফিকেশন অব আইডেন্টিটি বা পরিচয় যাচাইয়ের ভার্চুয়াল প্রক্রিয়াটি চালু হয়েছে।

ইসরায়েল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বহাল, পররাষ্ট্রনীতিও বদলায়নি: বাংলাদেশ
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপ-মহাপরিচালক গিলাদ কোহেন বাংলাদেশের সিদ্ধান্তে  সন্তোষ প্রকাশ করেছেন

র‌্যাংকিংয়ে অসামঞ্জস্যতার অভিযোগ

সিএনএন জানিয়েছে, এই সূচকে অস্থায়ী ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বিবেচনায় না নেওয়ায় বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে হেনলি ইনডেক্সের র‌্যাংকিং পয়েন্টের অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। কেননা, বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতিতে অনেক দেশেই অস্থায়ী ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রয়েছে।

ভারত ও ভূটান এগিয়ে

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও ভূটান পাসপোর্ট সূচকে এগিয়ে রয়েছে। ৫৮ টি দেশে ভিসামুক্ত সুবিধা নিয়ে ভারত ৮৪ তম ও ৫৩ টি দেশের ভিসামুক্ত সুবিধা নিয়ে ভূটান ৫৩ তম। ৪১টি গন্তব্যে ভিসামুক্ত সুবিধা নিয়ে ১০০ তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। যা গত বছরে ১০১ তম স্থানে ছিল বাংলাদেশ। এদিকে ৮৭ টি দেশের ভিসামুক্ত সুবিধা দিয়ে মালদ্বীপ রয়েছে ৬০ তম স্থানে।তালিকায় একেবারে শেষের দিকে নাম রয়েছে আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, পাকিস্তান, ইয়েমেন ও সোমালিয়া, ফিলিস্তিন, নেপাল, লিবিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মতো দেশগুলোর নাম। 

জাপানি পাসপোর্টধারীরা ১৯৩টি দেশে ভিসামুক্ত সুবিধা পান

হেনলি পাসপোর্টের করা গ্লোবাল পাসপোর্ট ইনডেক্সের মতে, সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের মালিক হিসেবে জাপানি পাসপোর্টধারীরা বিশ্বের মোট ১৯৩ টি গন্তব্যে ভিসামুক্ত বা অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পান। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুরের পাসপোর্ট। দেশটির নাগরিকরা ১৯২ টি গন্তব্যে অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পান। তালিকায় যৌথভাবে তৃতীয় স্থানে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ও জার্মানি। দেশ দুইটির নাগরিকরা অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পান ১৯১ টি গন্তব্যে।

১৯০টি গন্তব্যে অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা নিয়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছে চারটি দেশের নাম। দেশগুলো হচ্ছে ইতালি, ফিনল্যান্ড, স্পেন ও লুক্সেমবার্গ। ১৮৯টি গন্তব্যে ভিসামুক্ত সুবিধা নিয়ে যৌথভাবে পঞ্চম স্থানে রয়েছে ডেনমার্ক ও অস্ট্রিয়ার নাম। ১৮৮টি গন্তব্যে ভিসামুক্ত সুবিধা নিয়ে সপ্তম স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

Link copied!