পর্যটনের উন্নয়নের জন্য এসডিজির অন্তত ৬টি লক্ষ্য সরাসরি জড়িত। বাকি লক্ষ্যগুলোও পরোক্ষভাবে সম্পর্কিত। তাই পর্যটনের বিকাশ না হলে ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনও বাধাগ্রস্ত হবে। সেজন্য পর্যটনের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
সোমবার পর্যটন উন্নয়ন (ইনবাউন্ড, আউটবাউন্ড ও সিভিল এভিয়েশন) বিষয়ক এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এসব কথা বলেছেন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, পর্যটনের সঙ্গে সরাসরি ১০৯টি খাত ও পরোক্ষভাবে ১১০০টি খাত জড়িত। প্রতি একজন পর্যটকের জন্য ১০টি প্রত্যক্ষ ও ৩৫টি পরোক্ষ কর্মসংস্থানের তৈরি হয়। তাই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্যও পর্যটনকে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত।
এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তারা বলেন, সরকার কোভিড পরবর্তী সময়ে বিদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য বাংলাদেশ ভ্রমণকে উন্মুক্ত করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। পর্যটকদের জন্যও একই ঘোষণা দিলে বাংলাদেশে বিদেশি পর্যটকরা আসতে আগ্রহী হবেন। একইসঙ্গে অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পুনরায় চালুর দাবি জানানো হয়।
বৈঠকে ট্যুর অপারেটরদের লাইসেন্স প্রদান, রফতানিকারকদের স্বীকৃতি প্রাপ্তি, আউটবাউন্ড ট্যুর অপারেটরদের বিদেশে অর্থ পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ করা, পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের আওতায় আনা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা।
সভায় এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ‘দেশে পর্যটন খাতে দক্ষ জনবলের ঘাটতি রয়েছে।’ এক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কা থেকে দক্ষ ব্যবস্থাপকসহ জনশক্তি আমদানি করে এ খাতের ঘাটতি মোকাবিলা করার পরামর্শ দেন তিনি।
পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানোর ব্যাপারে জোর দেন সহ-সভাপতি এম এ মোমেন। তিনি বলেন, ‘পর্যটন খাতের উন্নয়নে সরকার আন্তরিক। তবে সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বয় আরও জোরালো করতে হবে।’
সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, ‘বাংলাদেশের পর্যটনে সেবার মান আরও বাড়াতে হবে।’ এক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়াতে কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
এফবিসিসিআই’র পরিচালক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসাইন বলেন, ‘পর্যটনের উন্নয়নে বাংলাদেশকে অবশ্যই উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, পর্যটন পণ্য চিহ্নিতকরণ ও সঠিক ব্র্যান্ডিং, হোটেলের ভাড়ার যৌক্তিকীকরণ করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।’
এফবিসিসিআই-এর পরিচালক আমজাদ হোসাইন বলেন, ‘বর্তমানে জিডিপিতে পর্যটনের সাড়ে তিন থেকে ৪ শতাংশ অবদান রয়েছে। এ হারকে ১০ শতাংশে নিয়ে যেতে হবে। সেজন্য নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।’
বাংলাদেশ ট্যুরিজ্যম বোর্ডের সাবেক সিইও আখতারুজ্জামান খান পর্যটন বোর্ডে এফবিসিসিআই’র প্রতিনিধিত্ব থাকা দরকার বলে মন্তব্য করেন।
বৈঠকে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর ইন চার্জ এম জি আর নাসির মজুমদার।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান তৌফিক উদ্দিন আহমেদ। স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সদস্যসহ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন— এফবিসিসিআইর পরিচালক হারুন অর রশীদ ও মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।