এপ্রিল ৯, ২০২২, ১১:২২ এএম
উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে শুক্রবার (৮ এপ্রিল) পর্যন্ত হাওর অঞ্চলে অন্তত পাঁচ হাজার ৩৮৩ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। এসব জমির নষ্ট হওয়া ফসলের বাজারমূল্য প্রায় ১০৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। হাওরের বেশ কিছু ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। কিছু বাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে। এসব বাঁধ ভেঙে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে যেতে পারে। কৃষকরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
তবে কৃষি বিভাগের দেওয়া হিসাবের চেয়ে বাস্তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি বলে কৃষকরা আশঙ্কা করছেন। কারণ প্রতিদিনই নতুন নতুন ফসলের ক্ষেত তলিয়ে যাচ্ছে। সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২ এপ্রিল টাঙ্গুয়ার হাওরের তাহিরপুর উপজেলার নজরখালি ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে যায়। এতে মধ্যনগর উপজেলা ও তাহিরপুর উপজেলার কাঁচা বোরো ধান তলিয়ে যায়। পাশাপাশি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ছোট কানলার হাওর, ছাতক উপজেলার পাগুয়ার হাওর, শাল্লা উপজেলার পুঁটিয়ার হাওর, কৈয়াবন হাওর, ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্রসোনার থাল হাওর, দিরাই উপজেলার চাপতির হাওরসহ ১৪টি হাওরের মোট চার হাজার ৯০০ হেক্টর জমির বোরো ধান তলিয়ে যায়। এর মধ্যে বেশি ফসল নষ্ট হয়েছে দিরাই উপজেলার চাপতির হাওরে। বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) কালনী নদীর তীরের বৈশাখীর বাঁধ ভেঙে এই ফসলহানির ঘটনা ঘটে। এতে তিনটি ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের কৃষকের একমাত্র ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে ৩৫০ হেক্টর জমির বোরো ফসল তলিয়েছে। সরকারি হিসাবে প্রতি হেক্টর জমিতে চার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হয়। সে হিসাবে পানিতে নষ্ট হয়েছে এক হাজার ৪০০ মেট্রিক টন চাল, যার বাজারমূল্য সাত কোটি টাকা। তবে হাওরের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকরা জানিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এর চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে।
উজানের পাহাড়ি ঢল কিশোরগঞ্জের দিকে এসে প্রথম হানা দেয় ইটনা উপজেলায়। কৃষি বিভাগের হিসাবে পানিতে ইটনায় তলিয়েছে প্রায় ২৮৫ হেক্টর বোরো জমি। একরে যার পরিমাণ প্রায় ৮০০ একর। এ উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত হাওরগুলো হচ্ছে—আফাইন্যার হাওর, চাচুয়ার হাওর, মৃগার হাওর, জিওলের বাঁধ এলাকার হাওর ও নদী তীরের নিচু জমি।