করোনা পরিস্থিতির প্রথম ধাপে দেশে আসা প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ হাজার কর্মী বিমানের টিকিট সংগ্রহ করেছেন। আরও হাজার হাজার বিদেশগামী কর্মী টিকিটের অপেক্ষায় আছেন। রেমিট্যান্স পাঠানো যোদ্ধাদের কথা বিবেচনায় রেখে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট লকডাউনের বাইরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন জনশক্তি রপ্তানিকারকরা।মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সাবেক অর্থ সচিব ফখরুল ইসলাম।
আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের পক্ষে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী বরাবর চিঠি দিয়েছে রিক্রুটিং এজেন্সি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন অব বাংলাদেশ (রাওয়াব)। গতকাল সোমবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সংগঠনের নেতারা এ চিঠি দেন।
গত রবিবার (১১ এপ্রিল) বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয়। ফলে দীর্ঘ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বিমানের টিকিট সংগ্রহ করে ফ্লাইটের অপেক্ষায় থাকা
তারা বলছেন, কাতার ও ওমানগামী হাজার হাজার কর্মীর কোয়ারেন্টিনের জন্য লাখ লাখ টাকা দিয়ে হোটেল বুকিং করে রেখেছেন, যে টাকা ফেরত পাওয়া যাবে না। এতে তাদের বড় অংকের লোকসান গুনতে হবে। এর আগে লকডাউনে হাজার হাজার প্রবাসীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাদের অনেকেই আবার নতুন করে বিদেশ গমনের সব প্রক্রিয়া শেষ করেছে। এখন কেবল ফ্লাইটের অপেক্ষা। এর মধ্যে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিট নন রিফান্ডেবল। ফলে কর্মীদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। অনেক কর্মীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। আবার অনেক কর্মীর ভিসার মেয়াদ দ্বিতীয়বার শেষ হবে। সময়মতো না যেতে পারলে নিয়োগকর্তারা চাহিদাপত্র বাতিল করতে পারে।
পরিস্থিতি যাই হোক, যতদিন পর্যন্ত কর্মী নেওয়া দেশগুলো বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করবে অন্তত ততদিন দেশের স্বার্থে বিদেশগামী কর্মীদের লকডাউনের আওতার বাইরে রেখে বিদেশ গমনের সুযোগ দেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, প্রয়োজনে কর্মীদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রাইভেট কার ভাড়া করে করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র ও বিমানবন্দরে যাতায়াতের নির্দেশ দেওয়া যেতে পারে।
জানতে চাইলে রাওয়াবের সভাপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, করোনার প্রথম ধাপে লাখ লাখ কর্মী দেশে ফিরে আসেন। পরিস্থিতি ভালোর দিকে গেলে আবার অনেকেই কর্মস্থলে ফিরে যেতে প্রক্রিয়া শেষ করে টিকিট কিনেছেন। যেসব দেশে তারা যাবেন, সেখান থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা আসেনি। অথচ হঠাৎ বিমান বন্ধ করে দেওয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। বিদেশগামী কর্মীদের কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দেশত্যাগ করতে হবে। এসব কর্মী ফিরে যেতে না পারলে নতুন সমস্যার সৃষ্টি হবে। লাখ লাখ টাকা লোকসান হবে। আর রপ্তানিকারকদের কোটি কোটি টাকা গচ্ছা দিতে হবে। আমরা দাবি জানাই সংশ্লিষ্টরা যেন সার্বিক দিক বিবেচনা করে বিদেশগামী কর্মীদের রুটি-রুজি, জীবন-জীবিকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাদের লকডাউনের বাইরে রাখেন। লকডাউনের মধ্যে বিদেশগামী কর্মীদের জন্য বিমান চালু রাখার অনুরোধ জানাই।