বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন আজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১১টার দিকে এই সেতুর উদ্বোধন করবেন। পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার কয়েক কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের একটি লালিত স্বপ্ন। সেতু উদ্বোধনের দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু শুধু দেশের আত্মনির্ভরশীলতা বা আত্মমর্যাদাই বৃদ্ধি করেনি বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান উঠে এসেছে এক অনন্য উচ্চতায়।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ দেশজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। নতুন রূপে সেজেছে পদ্মার পাড়। শুক্রবার ভোর থেকেই সভাস্থলে আসতে শুরু করেছেন মানুষ। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বাস, লঞ্চ, ট্রেন এমনকি সাইকেলে করেও অনেকেই এসেছেন। এমনকি তিন চাকার গাড়ির উপর বাহারি রঙের নৌকা বানিয়ে ৩০ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে সভাস্থলে এসেছেন রাজবাড়ীর জালাল উদ্দিন। সেই নৌকায় উঠে গান গেয়ে ও নাচের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন স্থলের আশপাশে মাতিয়ে রাখছেন তারা।
নৌকার নেতৃত্ব দেওয়া জালাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, “রাজবাড়ীর স্থানীয় এমপি জিল্লুল হাকিমের উদ্যোগে ৩০ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে সভাস্থলে এসেছি। এখানে আমরা ৪ দিন ধরে নৌকায় গান গেয়ে ও নাচের মাধ্যমে সভাস্থল মাতিয়ে রাখছি। পথেই রান্না করে খাচ্ছি।”
তিনি আরও জানান, “সেতুতে উঠতে পারবো কিনা বলতে পারছি না। যদি উঠতে পারি তাহলে আমাদের মনের আশা পূরণ হবে।”
৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচে নির্মিত পদ্মা সেতু রাজধানী ঢাকার সাথে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সংযোগ স্থাপন করেছে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সেতুটি হতে যাচ্ছে বিশ্বের বুকে এক রোল মডেল।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও বিশ্লেষকদের ধারণা, পদ্মা সেতুর বদৌলতে বাংলাদেশের দক্ষিণবঙ্গ হবে মিনি সিঙ্গাপুর। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের যাতায়াত ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হবে। সড়ক মহাসড়কগুলির আধুনিকায়ন হওয়ার পাশপাশি রাজধানী ঢাকার সাথে এ অঞ্চলের নিবিড় যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। এই সেতুর মাধ্যমে খুব দ্রুত, কম খরচ এবং আয়েসে পদ্মার উভয় পারের জেলাগুলোতে ভ্রমণ করা যাবে।