মেয়র জাহাঙ্গীরকে বরখাস্ত কেন অবৈধ নয়, জানতে চেয়ে রুল

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ২৩, ২০২২, ০৯:৪৬ পিএম

মেয়র জাহাঙ্গীরকে বরখাস্ত কেন অবৈধ নয়, জানতে চেয়ে রুল

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন ও মশিউর রহমান সবুজ। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো. নওরোজ রাসেল চৌধুরী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গোলাম সারওয়ার পায়েল।

গত ১৭ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রিটের আদেশের জন্য ২৩ আগস্ট (আজ) নির্ধারণ করেছিলেন।

গত ১৪ আগস্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের আইনগত বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে এ রিট দায়ের করেন ব্যারিস্টার মশিউর রহমান সবুজ।

২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়। এরপর ওই বছরের ২৫ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

এর আগে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ ওঠে। গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।

চার মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলকে কটূক্তি করেন। এমনকি রাষ্ট্রীয় দুটি সংস্থা নিয়েও নানা আপত্তিকর মন্তব্য করেন তিনি। জাহাঙ্গীর মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর দেশ স্বাধীন করার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

এ ঘটনায় গাজীপুরে মেয়রের শাস্তির দাবিতে মশাল মিছিল বের হয়। রাজনীতির অঙ্গনে জাহাঙ্গীরের বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। গাজীপুরের পরিস্থিতি শান্ত করতে আওয়ামী লীগ উদ্যোগ নেয়।

গত ৩ অক্টেবর দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলমকে শোকজ করে আওয়ামী লীগ। এতে সই করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নোটিশে ১৫ দিনের মধ্যে জাহাঙ্গীরকে জবাব দিতে বলা হয়। শোকজের জবাব দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান জাহাঙ্গীর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্ষমা পাননি তিনি।

এদিকে, গত ৪ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে পঞ্চগড়, রাজবাড়ী, গাজীপুর, নওগাঁ, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ জেলায় দায়ের করা ৭ মামলায় জাহাঙ্গীর আলমকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

Link copied!