করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী বিভাগে মৃত্যুসংখ্যা কোনোভাবেই থামছে না। বরং এই বিভাগের বিভিন্ন জেলায় করোনার মৃত্যুমিছিলে প্রতিদিনই নতুন নতুন মরদেহ যোগ হচ্ছে। শনাক্তের সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। করোনা রোগীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিভাগের করোনা চিকিৎসার অন্যতম প্রধান চিকিৎসালয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল। পার্শ্ববর্তী অন্যান্য জেলা থেকেও করোনা রোগী ভর্তি হচ্ছেন এই হাসপাতালে।
বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিট ও নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো দৈনিক করোনা রিপোর্টে এসব তথ্য জানানো হয়। বুধবার (২১ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) সকাল ৮ টার মধ্যে তাদের করোনায় মৃত্যু হয় বলে রিপোর্টে বলা হয়।
রামেক হাসপাতালের প্রতিদিনের রিপোর্ট পর্যালোচনা করলে দেখা যায়,বুধবার গত ২৪ ঘন্টায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার (২০ জুলাই) একদিনে ২০ জন মারা গেছেন। সোমবার গত ২৪ ঘন্টায় মারা যায় ১৪ জন। রবিবার গত ২৪ ঘন্টায় ১৭ জন মারা যায়। শনিবার মারা যায় ১৬ জন। শুক্রবার একদিনে ১৫ জনের মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার একদিনে ১৯ জন, বুধবার ২৫ জন, মঙ্গলবার (১৩ জুলাই)১৯ জন ও সোমবার ১৪ জন মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো রামেক হাসপাতাল রিপোর্টে বলা হয় ‘হাসপাতালের করোনা ইউনিট ও আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া ২২ জনের মধ্যে রাজশাহীর ১০ জন, নাটোরের ৬ জন, পাবনার ৪ জন ও নওগাঁর ২ জন রয়েছেন। মৃতদের মধ্যে রাজশাহীর ৪ জন, পাবনার ২জন ও নাটোরের ১ জন করোনা পজিটিভ আক্রান্ত ছিলেন। মৃত অন্য ১৫ জন সন্দেহভাজন রোগী হিসেবে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
রিপোর্টে আরও বলা হয় ‘বৃহস্পতিবার গত ২৪ ঘন্টায় করোনা ও এর উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছেন ৩১ জন। এনিয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ৪৩৪ জন করোনারোগী ভর্তি আছেন। এদিন গত ২৪ ঘন্টায় ৯ জন রোগী হাসপাতাল ছেড়েছেন বলেও রিপোর্টে জানানো হয়।
রামেক হাসপাতালের রিপোর্টে আরও বলা হয়, বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি মোট ৪৩৪ জন রোগীর মধ্যে রাজশাহীর ২২৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২২ জন, নাটোরের ৭২ জন, নওগাঁর ৪২ জন, পাবনার ৫২ জন, কুষ্টিয়ার ১০ জন, চুয়াডাঙ্গার ৪ জন, জয়পুরহাটের ৪জন, সিরাজগঞ্জের ১ জন. ঝিনাইদহের ২ জন ও ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার ১ জন রয়েছেন।
রিপোর্টে বলা হয়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৪৩৪ জন রোগীর মধ্যে করোনায় পজিটিভ শনাক্ত ২১০ জন, সন্দেহভাজন ১৬৬ জন ও ৫৮ জন নেগেটিভ রোগী রয়েছেন।