রেলের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতিসহ অনিয়মের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের শুনানি চলছে। রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশনে রেলের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতিসহ অনিয়মের বিরুদ্ধে ১১ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।
টিকিট না দিয়ে টাকা কেটে নেওয়ায় গত ১৪ ও ১৫ জুন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে অভিযোগ জানান রনি। বুধবার শুনানির জন্য তাকে ডেকেছে ভোক্তা অধিকার।
এ বিষয়ে রনি জানান, এক মাস পার হওয়ার পর শুনানির তারিখ দেওয়া হয়েছে।
শুরুতে স্টেশনের ভেতর থেকে বের করে দেয় তাকে। পরে বাইরে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ করলে সেখানেও বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন রনি। হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
রনি বলেন, প্রথমে একা আন্দোলনে নামলেও পরে বন্ধুরা এসে সঙ্গে যোগ দেয়। আন্দোলনের তৃতীয় দিন ৯ জুলাই পুলিশ বাধা দেয়। তখন থেকে গণস্বাক্ষর বন্ধ রেখে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে। বহিরাগতরা এসে গালাগালি করেছে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি আমার সাথে দেশের মানুষ একমত। দীর্ঘদিন রেলের অব্যবস্থাপনা চলছে। এটা শুধু আমার একার লড়াই না। এ লড়াই চলবে।
এত দিন ধরে আমরা অবস্থান করছি। তবুও রেলের কেউ যোগাযোগ করেনি। মঙ্গলবার রেল মন্ত্রণালয় অভিমুখে লংমার্চ করি আর এখন শুনানির জন্যে যাচ্ছি।
রনির ৬ দফা দাবিগুলো হলো
টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সহজ ডটকম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করা ও হয়রানির ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া।
যথোপযুক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ।
অনলাইনে কোটায় টিকিট ব্লক করা বা বুক করা বন্ধ করা ও অনলাইন-অফলাইনে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সবার জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা।
যাত্রীচাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া।
ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক-তত্ত্বাবধায়কসহ অন্য দায়িত্বশীলদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক নজরদারি ও শক্তিশালী তথ্য সরবরাহব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেলসেবার মান বাড়ানো।
ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন রেলের টিকিট কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন রনি। এরপর ঈদুল আজহার আগে ৭ জুলাই থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে অনশন শুরু করেন তিনি। ১০ জুলাই ঈদের দিনেও তিনি সেখানে অবস্থান নিয়েছিলেন।