আবারও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার ঘটনার পর এবার ‘আকাশ নীল’ নামে আরেকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান লোভনীয় অফার দিয়ে গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
প্রায় ৯ হাজার গ্রাহকের সাথে প্রতারণা করে প্রতিষ্ঠানটি হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ৩২ কোটি টাকা। পণ্য বা টাকা ফেরত না দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান ও পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান রনি রাজধানীর ধানমন্ডিতে কিনেছেন তিন কোটি টাকার ফ্ল্যাট। ব্যবহার করতেন ৬০ লাখ টাকার গাড়ি। প্রতি মাসে কর্মীদের বেতন দিতেন ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা।
রবিবার রাতে মশিউর রহমান ও ইফতেখারুজ্জামান রনিকে রাজধানী ঢাকা ও ফরিদপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, গ্রাহকদের কাছে কোম্পানিটির দেনা প্রায় ৩০ কোটি টাকা। টাকা ও পণ্য দিতে না পেরে, গত নভেম্বর থেকে অফিসে তালা ঝুলিয়ে লাপাত্তা ছিলো মশিউর ও রনি।
খন্দকার আল মঈন বলেন, “মশিউর ও রনি ২০১৯ সালে ‘আকাশ নীল’ নামে ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ খোলেন। এ প্রতিষ্ঠানের নামে তারা ট্রেড লাইসেন্সও করেন। প্রথমে শাক-সবজি কিনে অনলাইনে হোম ডেলিভারি শুরু করেন। করোনায় সুবিধা করতে না পেরে শুরু করেন ভিন্ন ব্যবসা। কোম্পানিকে লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত করেন। ব্যবসার ধরণ পাল্টে শুরু করেন ই-কমার্স ব্যবসা। ডিসকাউন্ট অফারে মোটরসাইকেল বিক্রি শুরু করেন। তিন দফায় তিনি ৯ হাজারের বেশি গ্রাহককে আকৃষ্ট করে হাতিয়ে নেন প্রায় ৩২ কোটি টাকা।”
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রাহকদের এসব টাকা সরাসরি মশিউরের নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হতো। অন্যান্য ই-কমার্স ব্যবসার মতো গেটওয়ে সিস্টেম থাকলেও সরাসরি গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হতো। ই-কমার্স নীতিমালার কারণে পণ্য ডেলিভারি না হলে টাকা গেটওয়েতে আটকে থাকার কারণে সেসব টাকা গ্রাহকদের রিফান্ড করা হতো। সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রদানকৃত অর্থ নিয়ে তারা প্রতারণা করতো।”
র্যাব জানায়, গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে 'আকাশনীল' এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকসসহ ৯ জনের এর বিরুদ্ধে গেল ১৮ মার্চ রাজধানীর শেরে-বাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগীরা। গ্রাহকদের অর্থ দিয়ে বিলাস বহুল জীবন যাপন ও সাম্প্রতিক সময়ে দেশ ত্যাগের পরিকল্পনা করেছিল এই প্রতারক চক্র।”
তিনি আরও জানান, “সম্প্রতি মশিউর দুবাই পালানোর জন্য ভিসা ও বিমান টিকিট ক্রয় করেন। তার আগেই গ্রেপ্তার হন মশিউর ও তার সহযোগী রনি।”