চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডের কন্টেইনার ডিপোতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রাসায়নিক থাকার কারণে সেখানে এতো বড় বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে ধারণা করছেন বাংলাদেশে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।
আগুন লাগলেই সেটা নেভানোর জন্য প্রথমেই পানির কথা মাথায় আসে। কিন্তু পানি দিয়েই সব আগুন নেভানো সম্ভব হয় না। অর্থাৎ আগুন লাগলেই পানি যে সবসময় সমাধান নয়-সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পর এই আলোচনা আবারও সামনে এসেছে। যে রাসায়নিককে এই বিস্ফোরণের অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে সেই রাসায়নিক হাইড্রোজেন পার অক্সাইড আসলে কী?
হাইড্রোজনের পার অক্সাইড একটি রাসায়নিক যৌগ যার সংকেত এইচ-টু-জিরো-টু। বিশুদ্ধ অবস্থায় এটা বর্ণহীন তরল। বিশেষজ্ঞরা হাইড্রোজেন পার অক্সাইডকে বর্ণনা করেন অক্সিডাইজিং এজেন্ট হিসেবে। সাধারণভাবে একে বলা যায় ব্লিচিং এজেন্ট। সরাসরি হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ব্যবহার বিপজ্জনক। তাই নিরাপত্তাজনিত কারণে সবসময় এর জলীয় দ্রবণ পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার করা হয়।
এটি নিজে দাহ্য পদার্থ না হলেও আগুন বা দাহ্য পদার্থের আশেপাশে রাখলে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশে অনেক কোম্পানি এখন হাইড্রোজেন পার অক্সাইড উৎপাদন করে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পর্যায়ে এর ব্যবহার আছে।
ব্লিচিংয়ের জন্য টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি বিশেষ করে ডাইং ইন্ডাস্ট্রিতে, অ্যাভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিতে,লেদার ইন্ডাস্ট্রিতে, ওয়াটার ট্রিটমেন্টে এই হাইড্রোজেন ব্যবহার করা হয়। এছাড়া বাথরুম পরিষ্কার, কাপড় ধোয়াসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্যেও ব্যবহৃত হয় এটি।
নানা কাজে এর ব্যবহার হলেও সঠিকভাবে সঠিক তাপমাত্রায় এটি ব্যবহার না করলে বিপজ্জনক হতে পারে। হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের স্ফুটনাঙ্ক পানির তুলনায় ৫০ ডিগ্রি বেশি। সে কারণে বেশি তাপমাত্রায় এটা বিপজ্জনক হতে পারে। এর উচ্চ ঘনত্ব বেশ বিপজ্জনক। এরকম রাসায়নিক যেন চোখ আর ত্বকের সংস্পর্শে না আসে সেজন্য সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার (৫ জুন) চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় ৪৩ জন নিহত হন। ডিপোর কনটেইনারে থাকা হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডকেই আগুণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণ বলে মনে করা হয়।