ব্রিটিশ হাইকমিশনার-বিএনপির বৈঠক শেষে আমির খসরু

হামলা-মামলা, খুন ও প্রশাসনে রদবদল নিয়ে যুক্তরাজ্য নজর রাখছে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

জুলাই ২০, ২০২৩, ০৮:২৭ পিএম

হামলা-মামলা, খুন ও প্রশাসনে রদবদল নিয়ে যুক্তরাজ্য নজর রাখছে

বৈঠক শেষে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথরিন কুকের সাথে বিএনপির প্রতিনিধি দল। সংগৃহীত ছবি

গত এক সপ্তাহ ধরে দেশে বিরোধী নেতকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা, মৃত্যু ও সরকারি কর্মকর্তাদের রদবদল নিয়ে যুক্তরাজ্য দৃষ্টি রাখছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এসময় ক্ষমতাসীন দল ভোট চুরির প্রকল্প অ্যাকটিভলি চালাচ্ছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।  

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথরিন কুকের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।  

এদিন বিকেল ৩টার দিকে শুরু হয়ে সোয়া একঘণ্টা ধরে চলা এ বৈঠকে  বিএনপি প্রতিনিধি দলে ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দলের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ।

অন্যদিকে, ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সাথে ছিলেন হাইকমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সিলর টিমোথি ডকেট। পরে বৈঠকের বিষয়বস্তু জানাতে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কথা বলেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় যুক্তরাজ্য। গেল এক সপ্তাহে বাংলাদেশের হামলা-মামলা, মৃত্যু ও সরকারি কর্মকর্তাদের রদবদল নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে তারা (যুক্তরাজ্য) দৃষ্টি রাখছে।”

তিনি বলেন, “নির্বাচন ছয় মাস পরে। কিন্তু ভোট চুরির প্রকল্প অ্যাকটিভলি (সক্রিয়ভাবে) চলছে। এজন্য বাংলাদেশে নিরপেক্ষ সরকার ব্যতিত একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। এই ভোট চুরির প্রকল্প ভাঙার একমাত্র পথ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। এই আলোচনা এখন সব জয়গায় চলছে। আলোচনায় এগুলো উঠে এসেছে।”

বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, “গত এক সপ্তাহের প্রেক্ষাপটটা যদি ব্যাখ্যা করি, কত মানুষের মৃত্যু, কতজন আহত-গ্রেফতার, কত মামলা, ডিসি পোস্টিং হচ্ছে, পুলিশ অফিসার পোস্টিং হচ্ছে, টিএনও পোস্টিং হচ্ছে। নির্বাচনে চুরি করার যে প্রকল্প এটা গত এক সপ্তাহ ধরে অব্যাহত আছে।”

বিএনপি’র নির্দলীয় সরকারের দাবির প্রতি যুক্তরাজ্যের সমর্থন আছে কিনা জানতে চাইলে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “সমর্থন তো শুধু গ্রেট ব্রিটেন না, সারা বিশ্বের প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক দেশগুলো বাংলাদেশে কেন আসছে, কেন বার্তা দিচ্ছে, কেন প্রতিনিধিমূলক, অংশীদারিত্বমূলক, অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কথা বলছে? তারা কি অন্য কোনো দেশে যাচ্ছে? সাউথ এশিয়াতে তারা কোথাও তো যাচ্ছে না। কেন আসছে?”

এসময় তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে যে নির্বাচন হয় না এটা কি বলার অপেক্ষা রাখে? তারা যেভাবে কথাগুলো বলছে এটার অর্থই হচ্ছে বাংলাদেশে নির্বাচন হচ্ছে না। বাংলাদেশের জনগণ ভোট দিতে পারছে না, জনগণ তাদের সংসদ ও সরকার নির্বাচন করতে পারছে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণতান্ত্রিক দেশগুলো নির্বাচন নিয়ে কথাগুলো বলছে।”

বৈঠকে আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে আমির খসরু আরও বলেন, “বাংলাদেশের জনগণের যে রকম প্রত্যাশা, তাদেরও (ব্রিটিশ হাইকমিশনার) একই প্রত্যাশা যে বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন- জনগণ তাদের সংসদ সদস্য নির্বাচন করবে, তাদের সরকার নির্বাচন করবে। এ কনসার্ন সবার আছে এবং ব্রিটিশ দূতের তো সব সময় ছিল। আমরা ওয়েস্ট মিনিস্টার ডেমোক্রেসি ফলো করি। সুতরাং তাদের সব সময় (কনসার্ন) ছিল। এই বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে।”

Link copied!