ট্রেনের ৫০০ টিকিটসহ ১২ কালোবাজারিকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা। অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে এসব টিকিট কাটা হয়। যা পরে চড়া দামে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করা হতো। আটকদের মধ্যে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের বেসরকারি ট্রেনের বিক্রয় প্রতিনিধিও রয়েছেন।
শুক্রবার (১৪ জুন) রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর এ তথ্য জানান।
ফিরোজ কবীর বলেন, “সোহেল ও আরিফুল নামের দুটি চক্র ঠাকুরগাঁও ও ঢাকা থেকে কালোবাজারি পরিচালনা করতো। বৃহস্পতিবার রাতে দুই থেকে তিন ধাপে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ঢাকার কমলাপুর ও আশপাশের এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে টিকেট কালোবাজারিদের আটক করা হয়েছে।
এখানে দুই ধরনের চক্র কাজ করে উল্লেখ করে ফিরোজ কবীর বলেন, “এক ধরনের চক্র অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হলে তা ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর দিয়ে কেটে রাখতো। পরে ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে চড়া দামে বিক্রি করতো। এছাড়া টিকেটের সফট কপি পাঠিয়ে বিকাশ বা নগদে টাকা বুঝে নিত। এমন চক্রের দুইজনকে মৌচাক মোড়ের আশপাশের এলাকা থেকে আটক করা হয়। এদের একজনের নাম মানিক ও আরেকজন বকুল। তাদের সঙ্গে কথা বলার পর জানা যায়, মানিক মূলত সোহেল নামের একজন ও ঠাকুরগাঁওয়ের আবু, রায়হান ও আনিস নামে আরও একজনের সঙ্গে কালোবাজারি ব্যবসায় আসে। তাদের কাছে আগামী ১০ দিনের টিকিট পাওয়া যায়। এগুলোর হার্ডকপি ও সফট কপি রয়েছে। এরমধ্যে দিনাজপুরের একতা এক্সপ্রেসের টিকিট ৩ হাজার টাকা করে বিক্রি করা হতো।”
ফিরোজ কবীর আরও বলেন, “মানিক ও বকুলের মাধ্যমে আনিস ও রায়হানকে আটক করা হয়। রায়হান একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করে। সেখানে ভুয়া সিম ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অনেকগুলো টিকিট একসঙ্গে কেটে নেওয়ার দায়িত্ব সে পালন করে। এদের বড় একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। সেখানে চাহিদা ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করা হয়। আর ঢাকাতে যারা অবস্থান করছে তারাও একই কাজ করে। রায়হান ও আনিস টিকিট পাঠাতো সোহেল ও মানিকের কাছে। আর মানিক ও বকুল ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে সেগুলো বিক্রি করতো। তাদের কাছে যে টিকিট পাওয়া গেছে সেগুলো আগামী ১০ দিনের অরজিনাল টিকিট।”
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে বেসরকারি ট্রেনের বুকিং সহকারী করেন আরিফুল ইসলাম উল্লেখ করে র্যাব কর্মকর্তা জানান, “তিনিও একটি চক্র চালান। বেসরকারি ট্রেনের বুকিং সহকারী হলেও তার থেকে সরকারি ট্রেনের টিকিট পাওয়া গেছে। তিনি অনেকদিন ধরেই এগুলোর সঙ্গে জড়িত।”