কুমিল্লায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৪ মাজারে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ০৪:৫৩ পিএম

কুমিল্লায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৪ মাজারে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে মাইকে ঘোষণা দিয়ে চারটি মাজারে হামলা ভাঙচুরের পর আগুন দিয়েছে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ লোকজন।

বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলার হোমনা উপজেলার আসাদপুর ইউনিয়নের আসাদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বিকেলে কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান বলেছেন ‘এ ঘটনায় উসকানি ও ইন্ধনদাতাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’ খবর সমকাল।    

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ‘বেমজা মহসিন’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে গত বুধবার সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে এক যুবক ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেন। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা থানার সামনে জড়ো হয়ে মহসিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করেন। দুপুরে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই যুবকের বিরুদ্ধে হোমনা থানায় একটি মামলা করেন। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

এদিকে ফেসবুকে আপত্তিকর ওই পোস্টকে কেন্দ্র আজ সকাল থেকে এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে আসাদপুর গ্রামে কফিল উদ্দিন শাহ ও হাওয়ালি শাহ মাজারে আগুন এবং কালাই শাহ ও আবদু শাহ মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরে মাজারগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান ও হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্ষ্যেমালিকা চাকমা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। 

হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা সমকালকে বলেন, গত বুধবার ধর্ম নিয়ে কটূক্তির কারনে জনতার মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ বিক্ষুব্ধ জনতা মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে। 

উপজেলা ইসলামী ফ্রন্টের সেক্রেটারি সফিক রানা ও ইসলামী যুব সেনার নেতা শরিফুল জানান, গ্রেপ্তার ওই যুবক দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে আসছিলেন। আমরা তার ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।

হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ধর্ম নিয়ে কটূক্তিমূলক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে জনতার দাবির প্রেক্ষিতে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে আজ আদালতের সোপর্দ করা হয়। তবুও সকালে বিক্ষুব্ধ লোকজন মাজারে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। 

ঘটনাস্থল থেকে ফিরে কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো: নাজির আহমেদ খান বলেন, ‘ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু আইন হাতে তুলে নিয়ে যারা ঘটনার উসকানি দিয়ে মাজারে হামলা ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

Link copied!